পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
১২৫

 ‘বিয়া হইছিল কোন্ গাঁয়ে?’

 ‘জানি না।’

 ‘আমি কই, বিয়া একটা হইছিল ত?’

 ‘জানি না দিদি।’

 সুবলার বউ না চটিয়া পারিল না, ‘পোড়া কপাল! কই, এই ছাওয়ালটা হইছে বিয়া হইয়া ত?’

 মনে মনে খানিক ভাবিয়া নিয়া এবারও আগের মতই জবাব দিল, ‘জানি না ত দিদি।’

 খালি জানি না, জানি না, জানি না। তুমি কি দিদি কিছুই জান না!—না কি জিভে কামড় শিরে হাত, কেম্‌নে আইল জগন্নাথ? আস্‌মান থাইক্যা হইছে বুঝি।’

 অনন্তর মা অপমানে মরিয়া যাইতে থাকে।

 ‘ঘরখান যেন শূদ্রাণীর মন্দির। না আছে এক বোন্দা সূতা, না আছে একখান তক্‌লি। নিজে যেমন ফুল-বামনি,—’

 ‘সূতা পাওয়া যাইব আইজ দুপুরে। ঐ বাড়ির বউঠাক্‌রাইনে দিবে।’

 ‘ও, কালোর মা? দর কত?’

 ‘জানি না। ধারে দিবে।’

 সুবলার বউ গম্ভীর হইয়া গেল। এইত জগৎবেড় ফেলিয়াছে। এ দিকে রাঘব-বোয়াল আছে মনের আনন্দে।

 ‘ভাল মানুষের হাতেই পড়ছ দিদি!’

 ‘দিদি তুমি কি যে কও। কি সোনার মানুষ গো দিদি। কত আদর করে আমারে আর অনন্তরে।’