তাঁদের পায়ে ধরাধরি করিয়া গ্রামের পক্ষ হইতে বড় রকমের একটা বন্দোবস্ত পাকাপাকি করিয়া আসিল। আর মাছ দিতে হইবে না। বছরে একবার করিয়া মাছের বদলে, মাথট তুলিয়া রাজ-সরকারে পৌঁছাইয়া দিয়া আসিলেই চলিবে। পৌঁছাইয়া দিবার ভারও পড়িল তারই উপরে। গত তিন বৎসরের কথা। সকলেই যার যার মাথট তার হাতে দিয়াছে। কিন্তু সম্প্রতি রাজ-পিয়াদা জানাইয়া গিয়াছে, তিন বৎসরের খাজনা বাকি পড়িয়াছে, অতঃপর আর বাকি পড়া উচিত হইবে না। এবং অবিলম্বে সেই বাকি পড়া খাজনা লইয়া রাজসরকারে এ-গাঁয়ের মালোদের উপস্থিত হওয়া উচিত।
আজিকার সভাতে রাজদূতের সেই ভীতিপ্রদর্শনের বিষয় প্রধান আলোচ্য হইলেও সামাজিক ব্যাপারের এবং কারো কারো ব্যক্তিগত বিষয়ের অনেক কথাই আলোচনার জন্য অপেক্ষমান। কিন্তু তাহার নিজের কৃতকর্মের কথাই সকলের আগে উঠিয়া পড়ে, এই ভয়ে কৃষ্ণচন্দ্র জোর করিয়া মুখে একটু হাসি টানিয়া নত মুখেই বলিল, ‘কি আর কইব! ভারতের মাইয়ারে বিয়া দিতে লাগব, তারই কথা উদার্চন করবার জন্য বৈঠক ডাকাইছে, কথা কি আর আমরা বুঝতে পারি না। হাঁ করতে আলজিহ্বার টের পাই।’
ভারত তার আড়াই বছরের নগ্না নন্দিনীকে রোরুদ্যমান অবস্থায় একটু আগে কোল হইতে নামাইয়া আসিয়াছে। তাহারই সম্পর্কে রসিকতা উঠিয়াছে দেখিয়া সেও চটপট