ডাকিল দয়ালচাঁদ, ‘তামসীর বাপ্ শুনছ নি?’
‘হ কাকা, শুনছি, কও।’
দয়ালচাঁদ বলিয়া চলিল, বাজারের কাছে তোমার বাড়ি। বাজারের কায়েতরা তোমার বাড়ি আসিয়া নাকি তবলা বাজায় আর মেয়েদের দিকে নজর দেয়। ভাবিয়া দেখ, কায়েতের সঙ্গে মিশিতেছ বলিয়া তারা তোমাকে কায়েত বানাইবেনা। তুমি মালোই থাকিবে। তারা তোমার বাড়ি আসিলে যদি সিংহাসনও দেও, তুমি তাদের বাড়ি গেলে বসিতে দিবে ভাঙ্গা তক্তা। তুমি রূপার হুকাতে তামাক দিলেও, তোমাকে দিবে শুধু কল্কেখানা। না না, কাজখানা তুমি ভাল করিতেছ না।
অনুতপ্ত তামসীর বাপ শুধু এই কথা কয়টি বলিতে পারিল, ‘দশজন পরমেশ্বর, অনেক কাঁদছি, আর আমারে কাঁদাইও না।’
সব শেষে উঠিল অনন্তর-মার কথা। তার বুক দুরদুর করিতে লাগিল।
একথাটাও ভারতকেই তুলিতে হইল, নতুন যে লোক আসিয়াছে, আপনারা সকলেই শুনিয়াছেন। তারে নিয়া কিভাবে সমাজ করিতে হইবে আপনারা বলিয়া যান। তারে কার সমাজে ভিড়াইবেন, কিষ্টকাকার, না দয়ালকাকার, না বসন্তর বাপকাকার—
কৃষ্ণচন্দ্র বলিল, ‘কোন্ গুষ্টির মানুষ আগে জিগাইয়া দেখ্, কোন্ কোন্ জাগায় জ্ঞেয়াতি আছে জান্।’