পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
তিতাস একটি নদীর নাম

আসিবে তারা তত সকালে খাইবে। এবং সকলে যত সকালে আসিয়া খাওয়া শেষ করিবে, গ্রামের নগর-কীর্তনও তত সকালে আরম্ভ হইবে। সারাটা গ্রাম ঘুরিয়া কীর্তন করার জন্য সকলের আগে বাহির হয় মালোপাড়ার দল। সাহাপাড়া আর যোগীপাড়া হইতেও দেখাদেখি দল বাহির হয়। কিন্তু মালোদের মত কীর্তনে অত জৌলুস হয় না। তারা কীর্তন করে ঝিমাইয়া আর মালোরা করে নাচিয়া কুঁদিয়া লাফাইয়া ঝাঁপাইয়া। তাই কদমা বাতাসাও ধরিতে পারে তারাই বেশি। সে যে কি আনন্দের! সে সময় পুরুষেরা কীর্তন করিয়া বাড়ি বাড়ি লুট ধরিতে যায় আর মেয়ের ঘরে বসিয়া নানা উপকরণের পঞ্চান্ন-ব্যঞ্জন রান্না করে।

 ঘরে ঘরে এত প্রাচুর্যের দিনে রামকেশবের বাড়িতে খাইতে আসিবে কে।

 তবু তার সাধ দুর্বার হইয়া উঠিল। সে স্থির করিল রাধামাধবের বাড়িতে একটা ‘সিধা’ দিবে আর খাইতে নিমন্ত্রণ করিবে যাত্রাবাড়ির রামপ্রসাদ জামাইকে, বাড়ির পাশের মঙ্গলা আর তার ছেলে মোহনকে আর সুবলার শ্বশুরবাড়ির সব কয়জনকে। আরো একজনের কথা তার মনে জাগে, সে গ্রামের নূতন বাসিন্দা, অনন্তর মা। তার ছেলেটাকে বড় আদর করিতে ইচ্ছা করে। সে কি আসিবে। কালোর-মা হয়ত এতক্ষণে তাকে নিমন্ত্রণ করিয়া বসিয়াছে। সে বাড়িতে খাইবেও অনেক ভাল।

 নিমন্ত্রণ পাইয়া সুবলার শাশুড়ী মায়ে-ঝিয়ে অনেক