চাউলের গুড়ি কুটিয়া রামকেশবের বাড়ি দিয়া আসিল। নিজেদের জন্য আগে যত গুড়ি কুটিয়া রাখিয়াছিল তাহাও পাঠাইয়া দিল। এবারের পরব তাদের বাড়িতে না হইয়া ঐ বাড়িতেই হোক।
রামকেশব যে সাধ মুখ ফুটিয়া প্রকাশ করারও সাহস পায় নাই, সে সাধ পূর্ণ করিল সুবলার বৌ। গুড়ি গোলার প্রাথমিক কাজ মায়ে-ঝিয়ে শেষ করিয়া সন্ধ্যা সময়ে সে গিয়া অনন্তর মাকে ধরিয়া বসিল, ‘পিঠা বানাইতে হইব দিদি, চল।’
‘কই?’
‘ঐ বাড়িত্ যে বাড়িত্ একটা পাগলা থাকে।’
অনন্তর মার বুকটা ছাঁৎ করিয়া উঠিল, ‘না না ভইন, অচিনা মানুষ তারা। কোনদিন তারাও কিছু কয় নাই, আমিও যাই নাই। আমি দিদি যাইতে পারি না।’
‘দিদি, তুমি মনে কইরা দেখ, আমিও অচিন আছ্লাম, চিনা হইলাম। মানুষের কুটুম আসা-যাওয়ায় আর গরুর কুটুম লেহনে-পুছনে। তুমি দিদি, ন কইর না। বুড়া মানুষ। কোন্ দিন মইরা যায়। তার মনে সাধ হইছে, লোকসেবা করাইব। এই পরবের দিনে লোক পাইব কই? এক লোক পাওয়া গেছে মন্দিরের রাধামাধবেরে, আর লোক পাওয়া গেছে আমার বাপেরে আর বড় মাত্বরেরে। আরেক লোক তোমার অনন্ত। তুমি-আমি কেবল পিঠা বানানোর লাগি, বুঝ্ছ নি।’
অনন্তর মাকে কিছু বলার অবকাশ না দিয়া সে অনন্তকে লইয়া রামকেশবের রান্নাঘরে ঢুকিল এবং প্রথম খোলার প্রথম