হয়ত সে ভাবিতেছে। কি ভাবিতেছে। সে যে ভাবিতে পারিতেছে ইহা কল্পনা করিয়া তাদের বুকে কোন্ সুদূরের ঢেউ আসিয়া আছড়াইয়া পড়িতেছে।
অনন্তর মার মন উদ্দাম হইয়া উঠিল, ‘কও না গো ভইন, তোমার কথাখান বিস্তারিৎ কইরা, শুনি, পরাণ সার্থক করি।’ কিন্তু মুখের শ্লেষে বুকের বেদন ঢাকা পড়ে না। যে-কাহিনীর বিয়োগান্তিকা নায়িকা সে নিজে, সখীর সে কাহিনী আগাগোড়া জানা আছে কিন্তু যাকে নিয়া এত হইল সেই যে শ্রোতা, একথা সে জানে না, এর চাইতে আর বিচিত্র কি হইতে পারে।
অনন্তর মার নির্বন্ধাতিশয্যে সুবলার বৌ প্রবাস-খণ্ডে কিশোরের পত্নীলাভ এবং পত্নি-অভাবে পাগল হওয়ার বিবরণ বর্ণনা করিয়া কহিল, ‘কন্যা, এই বর্তের নি এই কথা।’
অনন্তর মা অশ্রু গোপন করিয়া বলিল, ‘হ।’
‘তবে ঘটে দেও বেলপাতা।’
তার পরের যেটুকু অনন্তর মার জানা ছিল না, সে কাহিনী আরও করুণ। কিশোরকে বঞ্চিত করিয়া বাসন্তীর কি ভাবে বিবাহ হইল এবং সুবল কি করিয়া মারা গেল।
সুবলার বউ ঘটনা কয়টি আর একবার বলিল—
তারপর পাগল তো বাড়ি আসিল। বাপ মনে করিয়াছিল আনিবে টাকা, সেই টাকায় বাসন্তীরে আনিব ঘরে। কিন্তু তার বাড়াভাতে পড়িল ছাই। সে আসিল পাগল হইয়া।
বাসন্তীর বাপ দীননাথ। সে এখন রামকেশবকে এড়াইয়া