পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯০
তিতাস একটি নদীর নাম

চলে। আগে দুই জনে ভাব ছিল। পরে বাসন্তীকে কিশোরের সঙ্গে বিবাহ দিবার কানাযুষা যখন চলিতে লাগিল, ভাবটা তখন খুবই বাড়িয়াছিল। এখন দীননাথ এ বাড়ির উঠানও মাড়ায় না। ঘাটে দেখা হইলে পাছে কিছু জিজ্ঞাসা করে এই ভয়ে সে পাশ কাটাইয়া যায়।

 একদিন কিন্তু কিছুতেই পাশ কাটাইতে পারিল না। রামকেশব তাহাকে হাত ধরিয়া শুনাইয়া দিল, ‘আসমানে চান্দ উঠলে পর লোকে জানে। আমার কিশোর পাগল হইছে বেবাক লোকেই জানে। আমি কি আর ঘুর-চাপ দিয়া রাখছি?’

 দীননাথ চুপ করিয়া থাকে।

 ‘আমি কি মাথার কিরা দিয়া কই যে, বাসন্তীরে আমার পাগলের সাথে বিয়া দেও।’

 ‘কি যে তুমি কও দাদা। সেই কথা তুমি কি কইতে পার। তোমারে আমরা চিনি না?’

 ‘তবে এমন এড়াইয়া বেড়াইয়া চল কেনে ভাই।’

 ‘এড়াইয়া চলি, তোমার কষ্ট দেইখ্যা বুক কান্দে, তাই।’

 ‘আমার কষ্ট নিয়া আমি আছি। তার জন্যে তোমরা কেনে কান্দ?’

 দীননাথের বুক বেদনায় টনটন করিয়া উঠে। একমাত্র ছেলে। পাগল হইয়া গিয়াছে। ঘর দুয়ার ভাঙ্গে। জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করে। গলা ফাটাইয়া কাঁদে। বুড়া তাকে নিয়া কি বিপদেই পড়িয়াছে। একে শেষ বয়স। তার উপর