পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
২২৭

নাই। বুড়ি ঝাঁপের ওপাশে ঝিমাইতেছে। বুড়া তার শ্বশুর গিয়াছে হোলি গাহিতে। এখানে কেউ নাই। এই বেড়া-দেওয়া বারান্দা। তারা দুজনে এখানে একা। অনন্তর মা শক্তি সঞ্চয় করিয়া আপনাকে অটল করিয়া তুলিল।

 কিন্তু শেষ দিকে কিশোর একেবারে পরিবর্তিত হইয়া গেল। তার পাগলামি আবার মাথা চাড়া দিয়া উঠিল। সে এক সাংঘাতিক কাণ্ড করিয়া বসিল।

 সে ক্ষিপ্রগতিতে হাত বাড়াইয়া তার প্রেয়সীকে পাঁজাকোলা করিয়া তুলিল। তুলিয়া ঝড়ের বেগে উঠানে নামিয়া চীৎকার জুড়িল, ‘লাঠি বাইর কর্, ওরে লাঠি বাইর কর্। সতীর গায়ে হাত দিছে, আইজ আর নিস্তার নাই। মার্, কাট, খুন কর। একজনও পলাইতে না পারে। কই, আমার লাঠি কই।’ দম নিয়া আবার গলা ফাটাইয়া বলিল, ‘তেল আন, জল আন, তোমার মাইয়া মূর্ছা গেছে।’

 হোলির আসর ভাঙ্গিয়া লোকজন তখন ছুটিয়া আসিয়া পড়িয়াছে। কিশোর একবার লোকজনের দিকে আর একবার মেয়েটার দিকে চাহিতে লাগিল। তার চোখ দুটি আরও বড়, আরও লাল হইয়াছে। মেয়েটার খোঁপা খুলিয়া গিয়া, সাপের মত লম্বা চুল মাটিতে লুটাইয়া পড়িয়াছে। বুকটা চিতাইয়া উঁচু হইয়া উঠিয়াছে। এত উঁচু যে, কিশোরের নাকের নিশ্বাসে তার আবরণটুকুও সরিয়া যাইতেছে। সে মূর্ছা গিয়াছে। তার বুকের কাপড় শীঘ্রই সরিয়া গেল। কিশোর পুরাপুরি পাগল হইয়া সে বুকে মুখ ঘষিতে লাগিল। দাড়ি গোঁফের জবর