পুরানো কাপড়ের লাল নীল পাড়ের সূতা দিয়া অপটু হাতের সূঁচের ফোঁড়ে তৈয়ারী। কারো হাতে মালসা কারো বা কোঁচড়মাত্র সম্বল।
কি ভাবিয়া সহসা কাদির কল্পতরু হইয়া উঠিল। তাহার হয়ত ইচ্ছা হইয়াছিল ওদের হাতে হাতে অনেকগুলি আলু সে বিলাইয়া দেয়। কিন্তু সাবালক বড় ছেলে সামনে। কি মনে করিবে। বিক্রী করিতে হাটে আসিয়াছে, খয়রাত করিবার কোন অর্থ হয় না। ইচ্ছা করিয়া খুশি মনে নড়াচাড়া করিতে করিতে ঘাসের বাঁধ উপচাইয়া কতকগুলি আলু চারিপাশে ছড়াইয়া দিল ওদের জন্য। ছেলের দৃষ্টি এড়াইলনা, ‘না করলাম বোয়ানি, না করলাম সাইত; তুমি বাপ অখনই এইভাবে দিতে লাগ্ছ!’
কাদির অজুহাত পাইল সঙ্গে সঙ্গেই, ‘কাটা-আলু খরিদ্দারে নেয় না, বাছাবাছি কইরা থুইয়া রাখে। দিয়া দিলাম।’
ছেলে খুঁতখুঁত করিতে লাগিল, ‘কিন্তু সাইত করলাম না।’
কাদির দিল-খোলা ভাবে হাসিয়া বলিল; করলাম এই এতিম ছাইলা-মাইয়ার হাতেই পরথম সাইত। খাইয়া দোয়া করব। আল্লা বড় বাঁচান বাঁচাইছে আইজ।’
কাদিরের এই কাজকর্ম বনমালীর খুব ভাল লাগিতেছিল। বিস্ময়ের সহিত সে কাদিরের মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। কাদির বনমালীর দিকে চাহিয়া তার ছেলেকে লক্ষ্য করিয়া বলিল, ‘বড় আভাগ্যা এরা। কেউর মা নাই, বাপ নাই, লাথি ঝাঁটা খায়; কেউর মা আছে, কিন্তু দানা দিতে পারে