পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
তিতাস একটি নদীর নাম

 ‘কোন্ হাটি বাড়ি তোর্?’

 আঙ্গুল দিয়া মালোপাড়া দেখাইয়া দিল।

 ‘জাতে তুই মালো? আম্‌রার স্বজাতি?’

 অনন্ত ভালে করিয়া কথাটা বুঝিল না। আব্‌ছাভাবে বুঝিল, তার মাসীর মত, এও তারই একটা কেউ হইবে! তা না হইলে অত কথা জিজ্ঞাসা করিতেছে কেন?

 ‘তোর বাড়িত্ লইয়া যাইবি আমারে?’

 গলার ধড়ার সূতাটা দাঁতে কামড়াইতে কামড়াইতে ঘাড় কাৎ করিয়া অনন্ত জানাইল, হাঁ, নিয়া যাইবে।

 ‘বাজার জম্‌ছে। চল্ তোরে লইয়া বাজারটা একবার ঘুইরা দেখি।’

 বাজারের তখন পরিপূর্ণ অবস্থা। কাদিরের দোকানের চারিপাশে অনেক আলুর দোকান বসিয়াছে। গণিয়া শেষ করা যায় না। ক্রেতাও ঘুরিতেছে অগণন। হাতে খালি বস্তা লইয়া তাহারা দরদস্তুর করিতেছে আর কিনিয়া বস্তাবন্দী আলু মাথায় তুলিয়া ভিড় ঠেলিয়া বাজারের বাহির হইতেছে। একটানা একটা কলরব শুরু হইয়া গিয়াছে। কাছের মানুষকে কথা বলিতে হইলেও জোরগলায় বলিতে হয়, কানের কাছে মুখ নিয়া।

 কাদির বড় এক পাইকার পাইয়াছে। খুচরা বিক্রিতে ঝামেলা। অবশ্য দর দুই চারি পয়সা করিয়া মণেতে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু মণামণি হিসাবের বিক্রি তার চাইতে অনেক ভাল। আগেভাগে শেষ করিয়া উঠিয়া পড়া যায়।