পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৪
তিতাস একটি নদীর নাম

আর একখানে পুঁতির মালা, রেশমী ও কাঁচের চুড়ি। আরও অনেক কিছু। এক একটা দোকানে এত সামগ্রী। বনমালী পাশে বসিয়া দুই তিনটা সাবানের গন্ধ শুঁকিয়া বলিল, জলে-ভাসা সাবান আছে? আছে শুনিয়া গন্ধ শুঁকিয়া দর করিয়া রাখিয়া দিল। কাঁচের চুড়ির মধ্যে তিন আঙ্গুল ঢুকাইয়া মাপ আন্দাজ করিল, তারপর রাখিয়া দিল। কিনিল না। কিনিল খালি কয়েকটা বঁড়শি। এক কোণে কতকগুলি বাল্যশিক্ষা, নব-ধারাপাত বই। অনন্ত ইত্যবসরে বসিয়া পাতা উল্টাইতে শুরু করিয়া দিল। দুইটা গরু নিয়া এক কৃষক চাষ করিতেছে ছবিটাতে চোখ পড়িতে না পড়িতে দোকানী ঝঙ্কার দিয়া উঠিল। অনন্তর আর দেখা হইল না।


 বনমালী অনন্তর হাত ধরিয়া টানিতে টানিতে ধনঞ্জয়কে বলিল, ‘গাঁওয়ের নাপিতে চুল ছাঁটেনা, যেমুন কচু কাটে। আর হাটের নাপিতে চুল কাটেনা, যেমুন রান্দা দিয়া পালিশ করে। নাওয়ে গিয়া থাইক্য, চুল কাটাইতে গেলাম।’

 নাপিতের উঁচু ভিটিখানাতে গিয়া দেখা গেল কতক নাপিতের হাতের কাঁচি, চিরুণির উপর দিয়া কাচুম কাচুম করিয়া বেদম চলিয়াছে, আর কতক নাপিত ক্ষুর কাঁচি চিরুণি এবং নরুণ লইয়া চুপ করিয়া বসিয়া আছে। মাথায় অগোছাল লম্বা চুল দেখিয়া বনমালীর উদ্দেশ্য তারা বুঝিল। বুঝিয়া নানা জনে নানা দিক হইতে তাহাকে ডাকিতে লাগিল। অনন্তর