করে,—মরেও না। আইজ ত নিখোঁজ দেইখ্যা মনে করছিলাম, বুঝি পেরেতে ধরছে, অখন দেখি চান্দের ছটার মত হাজির! মনে লয় পোড়া কাঠ মাথায় মাইরা খেদাইয়া দেই, পোড়ামুখি মাইয়া আমার কাল করছে।’
সুবলার বৌ বাসন্তী একটু আগে নদীর পাড় হইতে খুঁজিয়া আসিয়া কাজে হাত দিয়াছিল। কিন্তু হাতে কাজ উঠিতেছিল না। দৌড়াইয়া আসিয়া বলিল, ‘কি কও গো মা তুমি। মা-মরা, হাতে আগুন, মুখে হবিষ। তুমি কি সগল কথা কও। শত্তুরেও তো এমুন কথা কয় না!’
‘শত্তুর শত্তুর। ইটা আমার শত্তুর। অখনই মরুক। সুবচনীর পূজা করুম।’
সুবলার বউ এবার রণচণ্ডী হইয়া উঠিল, ‘ইটা মরব কোন্ দুঃখে? তার আগে আমি মরি,—আমি ঘরের বাইর হই!’
মা হঠাৎ নরম হইয়া বলিল, ‘অখন আর কিছু করলাম না। দিমু খেদাইয়া একদিন চেলাকাঠ পিঠে মাইরা।’
মাসী শুইয়া শুইয়া অনন্তকে আজ কতকগুলি নূতন কথা শুনাইলঃ মা যদি মরিয়া যায়, তবে সে মা আর মা থাকে না, শত্তুর হইয়া যায়। মরিয়া যেখানে চলিয়া গিয়াছে, ছেলেকে সেখানে লইয়া যাইবার জন্য সব সময়েই তার লক্ষ্য থাকে। অন্তত শ্রাদ্ধশান্তি না হওয়া পর্যন্ত একমাস তো খুব ভয়ে ভয়ে কাটাইতে হয়। তার আত্মা তখন ছেলের চারিপাশে ঘুরিয়া বেড়ায় কি না। এক পাইলে, কিংবা আঁধারে, কি বট বা হিজল গাছের তলায় পাইলে, কিংবা নদীর পারে পাইলে,