একা মানুষ সে। তিন পেট চালায় তার উপর এই অবাঞ্ছিত পোষ্য। কিন্তু কি করা যায়!
একদিন বুড়ি প্রস্তাব করিল, ‘ছরাদ্দ শান্তি হইয়া গেছে। অখন কানে ধইরা নিয়া জাল্লার নাওয়ে তুল।’
বুড়া ইন্ধন জোগাইল, ‘হ। জগতারের ডহরের গহীন পানিত্ একদিন কানে ধইরা তুইল্যা দিমু ছাইড়া। আপদ যাইব।’
নদীর উপর নৌকাতে ভাসিয়া মাছ ধরার আনন্দ অনন্তর মনে দম্কা হাওয়ার মত একটা দোলা জাগাইয়া দিল, কিন্তু বুড়া-বুড়ির কথার ধরণ দেখিয়া উহা উবিয়া গেল।
তাহা সত্ত্বেও একদিন সন্ধ্যাবেলা জাল কাঁধে লইয়া বুড়া যখন হুকুম করিল, ‘এই অনন্ত, হুক্কা-চোঙ্গা হাতে নে, আজ তোরে লইয়া জালে যামু।’ অনন্ত তখন বিদ্যুতের বেগে আদিষ্ট দ্রব্যগুলি হাতে লইয়া পরম বাধিতের মত আদেশকারীর পাছে পাছে চলিল।
মাসী দৌড়াইয়া আসিয়া বাধা দিল। বাপ তার অত্যন্ত রাগী মানুষ। রাগ হইয়া যখন মারিতে আরম্ভ করিবে, এক নৌকায় অনন্তকে তখন বাঁচাইবে কে?
‘হাতের আগুন নিব্তে না নিব্তে তুমি তারে জালে নিওনা বাবা। ছোট মানুষ। জলে পইড়া মরে, না সাপে খাইয়া মারে, কে কইব। অখন তারে নিওনা, আরেকটু বড় হইলে নিও।’
মাসীর কথায় অনন্ত অপ্রসন্ন মুখে নিরস্ত হইল। এবং