করিয়াছে, তারা হয়ত বাড়িতে আসিয়া দেখে ঘর পড়িয়া গিয়াছে।
আজিকার এত বড় ঝড়ে কিন্তু মালোপাড়ার অধিক লোকের ক্ষতি করিতে পারে নাই। ক্ষতি করিয়াছে মাত্র দুইটি পরিবারের। কালোবরণের বড় নাওখানা লইয়া মাছ কিনিবার জন্য বড় গাঙে গিয়াছিল। সে নাওখানা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। লোকজন পায়ে হাঁটিয়া পরদিন বাড়ি আসিয়া জানাইয়াছে, একখানা তক্তাও পাওয়া গেল না। একেবারে চুরমার করিয়া ফেলিয়াছে।
ঘর ভাঙ্গিয়াছে অনন্তর মাসীর বাবার। যে ঘরে অনন্তকে লইয়া মাসী শুইত সেই ঘরখানা।
ঘরখানা আবার তুলিয়া লইয়া, হিসাব করিয়া দেখা গেল, বুড়ার গাঁটের সব টাকাকড়ি খরচ হইয়া গিয়াছে। এখন দিন-আনা দিন-খাওয়ার অবস্থা। যেদিন মাছ না পাইবে সেদিন উপবাস করিতে হইবে। ঘোর দুর্দিনে এমন অবস্থায় একটা উপরি পোষ্যকে কিছুতেই রাখা চলে না। একথা বুড়ার জপমালা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। আর না বলিলেও মাসীর বুঝিতে কষ্ট হয় না। তার মার রকমসকম দেখিয়া মনে হয়, একদিন হয়ত সত্যই ছেলেটার পিঠে সে পোড়া কাঠ চাপিয়া ধরিবে।
অনেক দিন ধরিয়া সে কালোর মার কথা ভাবিতেছিল। একদিন তার কাছে গিয়া বলিল, ‘আপনে ত তার মারে কত ভালবাসতেন। আমার কাছে তার কষ্টের পারাপার নাই। আপনে তারে লইয়া যান, দুই মুঠা খাইয়া বাঁচব।’