কিন্তু কালোর মার মন খারাপ। অতবড় নৌকা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। এমন বিপদে কার না মন খারাপ হয়। এই সময়ে এসব ভাবনার কথা এড়াইয়া চলিতেই ভাল লাগে। তবে কালোর মা একেবারে নিরাশ করিল না; বর্ষার পর সুদিন আসিলে কালোবরণ উত্তর হইতে কাঠ আনিবে, নূতন নাও গড়িবে। সে নাওয়ে যখন জিয়লের ক্ষেপ দিতে যাইবে, কালো তখন অনন্তকে সঙ্গে নিতে ভুলিবে না। এই কথা শুনিয়া সুবলার বৌর ভিতরটা মোচড় দিয়া উঠিল।
কিন্তু সে অনেক দিনের কথা।
আর একদিন খুব বৃষ্টি হইয়া গেল। বাদলায় পান খুব পচে। তখন পচা-ভালো-মেশানো বিড়ায় বিড়ায় পান ফেলিয়া দেয় দোকানীরা। অনন্তর বয়সী ছেলেমেয়েরা এমন পান হাতভরতি করিয়া কুড়াইয়া আনিতেছে। মাসীর মা নিজের চোখে দেখিয়াছে। তারা অনেক পান আনিয়াছে। আর তাদের মা’রা ডালায় করিয়া লইয়া ধুইয়া খাইয়া মুখ লাল করিয়াছে। অনন্ত কেন গেল না, গেলে ত আনিতে পারিত। অনন্তর খুব ভাল লাগে, হাটে-বাজারে ঘুরিতে। বুড়ির ইঙ্গিত পাইয়া সে খুশিমনে ছুটিল বাজারের দিকে।
বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে একটু আগে। বাজারের রাস্তা দিয়া তখনও জলের স্রোত চলিতেছে। কোথায় কোন ডোবা উপচাইয়াছে, তারই জল। দুএকটি পানাও আসে সেই জলের সঙ্গে। অনন্তর বয়সী কয়েকটি ছেলে, তাদের বাপদাদারা