পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬০
তিতাস একটি নদীর নাম

একসময় বন্ধ হইয়া গেল। কৈ মাছও আজিকার মত উজাইবার পালা সাঙ্গ করিল।

 পানের কথা অনন্তর একবারও মনে পড়িল না। এক কোঁচড় জ্যান্ত কৈ মাছ লইয়া খুশি মনে সে ঘরে গিয়া ঢুকিল।

 বাড়ির কর্তার মন ভাল না। খালে জাল পাতিয়া পুঁটি মাছে নাও বোঝাই করিয়া ফেলিয়াছে, কিন্তু এক পয়সাও বেচিতে পারিল না। বাদলার দিন বলিয়া ব্যাপারী আসিল না, হাটও বসিল না। বাদলার দিন বলিয়া শুকাইতেও দেওয়া চলিবে না। এত মাছ সে করিবে কি?

 ‘আমি চাইলাম পান, লইয়া আইছে মাছ। মাছ দিয়া আমি কি করুম। আমার কি মাছের অভাব?’ বুড়ি গজ গজ করিতে লাগিল।

 পরের দিন দুপুরে বুড়ির মনে পড়িয়া গেল, অনন্তকে তো পোড়াকাঠ মারা হয় নাই। উনানের ধারে গিয়া দেখে সেখানে পোড়া কাঠ নাই। তার উনুনমুখী মেয়ে খড়দিয়া রান্না করিতেছে। অনন্ত কাছে বসিয়া কি যেন গিলিতেছে। বুড়ি খপ্ করিয়া একমুঠা পোড়া খড় উনান হইতে তুলিয়া লইল। একদিক তখনো জ্বলিতেছে। কিন্তু এ দিয়া তো পিঠে মারা যায় না। মুখে গুঁজিয়া দেওয়া যায়। বুড়ি এক হাতে অনন্তর হাত ধরিয়া আরেক হাতে জ্বলন্ত খড় তার মুখে গুঁজিতে গেল। তার মেয়ে বাধা দিতে আসিলে তারও মুখে গুঁজিতে গেল। মেয়ে হেঁচ্‌কা টানে খড়গুলি বুড়ির হাত