পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
২৮৯

 ‘শীতলীয়া কথা কইও ন। সাধু; হাতের কঙ্কণ হাতে থাকে, গলার হার গলায় থাকে। আর সেই মানুষ তিতাসে মাছ ধরতে চইল্যা যায়। বাড়ি আইলে যদি কই অনেক দিন দাদারে দেখি না, চলনা গো, একদিন গিয়া দেইখ্যা আই, কয়, দাদারে নিয়াই সংসার কর গিয়া। তোমারে আমি চাই না। শুনছ কথা!’

 ‘ভুল কর্‌লা দিদি। পরাণ দিয়া চায় বইল্যাই চাই না কইতে পার্‌ছে।’

 তার গলার মোটা তুলসীমালার দিকে চাহিয়। উদয়তারার খুব শ্রদ্ধা হইল। আরও শ্রদ্ধা হইল যখন দেখিল, তার চোখ দুইটি আবেশমাখা—মুখ ভাবময় হইয়া উঠিতেছে—সে গান ধরিয়াছে—‘ও চাঁদ গৌর আমার শঙ্খ-শাড়ি, ও চাঁদ গৌর আমার সিঁথির সিন্দূর চুল-বান্ধা দড়ি, আমি গৌর-প্রেমের ভাও জানি না ধীরে ধীরে পাও ফেলি!’ — গানের তালে তালে তার মাথাটাও দুলিতে লাগিল।

 পরিবেশে আধ্যাত্মিক ভাবটা একটু ফিকা হইয়া আসিলে উদয়তারা বলিল, ‘দেখ মানুষ, আমার একখান কথা। দাদার লাগি কিছু একটা করলা না। এমন কার্তিক হইয়াই দাদা দিন কাটাইব? দাদার মাথায় কি শোলার মটুক কোন কালেই উঠ্‌ব না?’

 ‘বনমালীর কথা কও? তুমি ত জান দিদি, মা বাপ ভাই বেরাদর যার নাই, ক্ষেত পাথর জাগা জমি যার নাই, টাকা কড়ি গয়নাগাটি যার নাই, তারে লোকে মাইয়া দেয়? অন্ততঃ