তোমার, তবু ভালা। মানুষে কয়, তীর্থের মধ্যে কাশী ইষ্টির মধ্যে মাসী, ধানের মধ্যে খামা কুটুমের মধ্যে মামা।’—বলিয়া হঠাৎ মেয়েটি কোথায় চলিয়া গেল।
অনন্ত মনে মনে ভাবিল, বাব্বা, খুব যে শিলোক ছাড়ে। উদয়তারার কাছে একবার নিয়া গেলে মন্দ হয় না।
একটু পরেই পূজামণ্ডপের সামনে মেয়েটির সহিত আবার দেখা হইল।
‘আচ্ছা, আমারে তোমার মাসীর বাড়ি লইয়া যাইবা?’
‘কেমনে লইয়া যামু। অনেক দূর যে। নাওয়ে গেলে এক দুপুরের পথ।’
‘মানুষে কি মানুষেরে দূরের দেশে লইয়া যায় না?’
‘যায়। কিন্তু অখন যায় না। বৈশাখ মাসে তিতাসের পারে মেলা হয়। তখন লইয়া যায়। অনেক দূর থাইক্যা অনেক মানুষ তখন অনেক মানুষেরে লইয়া যায়!’
‘তখন আমরেও লইয়া যাইও। কেমুন?’
‘আমারত নাও নাই। আচ্ছা বনমালীরে কইয়া রাখুম। তার নাওয়ে যাইতে পারবা।’
‘পরের নাওয়ে বাবা যাইতে দিলে ত?’
‘খালের টেকের ভাঙ্গা নাওয়ের খোড়ল থাইক্যা সাতদিনের উপাসী মানুষেরে যে-জন বাইর কইরা আনল, তারে কও তুমি পর! কি যে তুমি কও।’
মেয়েটির চোখমুখ উজ্জ্বল হইয়া উঠিল, ‘খালের টেকে ভাঙ্গা নাওয়ের খোড়লে তুমি থাকতা, ডর করত না তোমার?