রাইতে দেও-দৈত্য যদি দেখা দিত। কও না, কি কইরা তুমি থাক্তা এক্লা—’
‘সে এক পরস্তাবের কথা। কইতে গেলে তিনদিন লাগব!’
‘তোমরার গাঁওয়ে আমারে লইয়া যাইবা? সেই নাওখান দেখাইবা?’
‘আচ্ছা নিয়া যামু।’
‘নিবা যে, তোমার মাসী আমারে আদর করব ত তোমার মত?’
‘হ, তোমারে করব আদর! আমারেই বইক্যা বাইর কইরা দিল।’
‘কও কি! বাইর কইরা দিল, আর ডাইক্যা ঘরে নিল না?’
‘না।’
‘তবে গিয়া কাম নাই। তুমি আম্রার বাড়িতেই চল। কেউ তোমারে বাইর কইরা দিব না। যদি দেয়ও, আমি তোমারে ডাইক্যা ঘরে নিমু।’
কথাগুলি অনন্তর খুব ভাল লাগিল। একঘর ভরতি লোকের মধ্যে থাকিতে খুব ভাল লাগিবে। সেখানে দশটি লোকে দশ রকমের কথা বলিবে, বিশ হাতে কাজ করিবে, দশমুখে গল্প করিবে—একটা কলরবে মুখরিত থাকিবে ঘরখানা। তার মধ্যে এই চঞ্চল মেয়েটি তার সঙ্গে খেলা করিবে, জালবোনা মাছধরা খেলা। অনন্ত সত্যিকারের জেলে হইয়া নৌকাতে না উঠা পর্যন্ত তাকে এই খেলার মধ্য দিয়াই জাল ফেলা জাল তোলা আয়ত্ত করিতে হইবে।