পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৪
তিতাস একটি নদীর নাম

 ছাদির শেষ চেষ্টা করিল, ‘বা’জান—’

 ‘না না, তারে আমি ডরাই না।’

 ‘তবে চল আমার সাথে। দেখি, কই কি করছে। মামলার গোড়া কাটা যায় কিনা। চল কাইল সকালে।’

 ‘হ, কাইল সকালেই যামু। কিন্তুক তোমার সাথে যামু না, আর তোমার অই আদালতেও যামু না। আমি একবার যামু তারই কাছে।’

 ‘তার কাছে গিয়া কি করবা?’

 ‘তার চোখে চোখ রাইখ্যা জিগামু—তার ইমানের কাছে জিগামু, আমার বাড়ির গোপাট দিয়া যাইবার সময় তারে বিনাখতে টাকা দিছি—সেই-কথাটা তার মনে আছে কি না।’

 ‘যদি কয় মনে নাই?’

 ‘পারব না। মুহুরী পারব না। আমার এই চোখের ভিতর দিয়া আল্লার গজব তারে পোড়াইয়া খাক করব। কি সাধ্য আছে তার, এই রকম দিনে ডাকাতি, হাওরে ডাকাতি কর্‌ব?’

 ছেলে হতাশ হইয়া বলিল, ‘বা’জান, তুমি বড় কাঁচা কাম কর।’

 ততোধিক হতাশ হইয়া মুহুরী বলিল, ‘পাড়াগাঁওয়ে থাক, পাড়াগাঁইয়া বুঝ্ তোমার। তোমারে খামকা উপদেশ দিয়া লাভ নাই। তোমারে কওয়া যা, ধান ক্ষেতে গিয়া কওনঅ তাই! থাক গরুর সাথে মাঠে, গরুর বুদ্ধিই তো হইব তোমার।’

 এভাবে বুদ্ধির খোটা দেওয়ায় পিতাপুত্র দুজনেই চটিল।

 ‘আমার কাছে কত লোক যায় মামলা মোকদ্দমার পরামর্শ