‘একদিন হৈ-হাঙ্গামা করবি, জিত্বি, পিতলা কলস পাইবি, মানলাম। তারপর এই-নাও দিয়া তুই করবি কি? কি কামে লাগব এই দেড়শ-হাতি লিক্লিকা পাতাম নাও?’
—কেন, অনেক কাজে লাগিবে। বর্ষার যে-কয়মাস ক্ষেতে-খামারে পানি থাকিবে, এ নৌকা লইয়া বিলে গিয়া বোঝাই-ভরতি ঘাস কাটিয়া আনা যাইবে গাই-গরুর জন্য।
—সে কাজ তো একটা ঘাস কাটা পাতাম দিয়াই চলে?
—চলে, কিন্তু ঘাস কাটা পাতাম দিয়া তো আর নাও-দৌড়ানি চলে না। আর এই নাও দিয়া দৌড়ানিও চলে ঘাস কাটাও চলে।
—বিলের পানি শুকাইয়া গেলে তো এ নাও অচল, তখন তারে দিয়া কি করিবি? রোদে তখন সেত খালি ফাটিবে।
—ফাটিবে কেন? গেরাপি দিয়া তারে তিতাসের পানিতে ডুবাইয়া রাখিব, তার পেটে কতগুলি ডালপালা রাখিয়া দিব, আশ্রয় পাইয়া মাছের আসিয়া জমিবে; তখন সময়-সময় জল সেঁচিয়া সে-মাছ ডোলা ভরিয়া বাড়িতে আনিব।
ছাদিরের বুদ্ধি দেখিয়া কাদির অবাক হইল, বলিল, ‘মিয়া, বুদ্ধি বাৎলাইছ চমৎকার।’
রমু কয়েক রাত স্বপ্ন দেখিয়াছে সেই মালো দুজনকে—যে দুজন কোমরে কাছি বাঁধিয়া নদী নালা ভাঙ্গিয়া তার বাপের জন্য কাঠ লইয়া আসিতেছে।