হইতে জবাব আসিল, সবখানেই রাধা রে দাদা, সবখানেই রাধা।
চোখা মন্তব্যটা শুনিয়া আশেপাশের নৌকার লোকজন হাসিয়া উঠিল। এমন সময় বড়বাড়ির একজন উদয়তারার মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া বলিল, এদিকে শুন ভইন কি মজার গানখান হইতেছে—
ও তোরে দেখিনাই রে, কাল সারা রাত কোথায় ছিলি রে। থানায় থানায় চকিদার পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে, কোন্ কোন্ নারীর শুভ বরাত, আমার বরাত পুড়ে—বরাত পুইড়া গেলরে, কাল সারা রাত কোথায় ছিলি রে॥
হবিগঞ্জে নবীগঞ্জে কোণাকুণি পথ, প্রাণবন্ধু গড়াইয়া দিছে ইল্শা-পাট্যা নথ—সে নথ পইড়া গেল রে, কাল সারা রাত কোথায় ছিলি রে॥
শুনিয়া উদয়তারা একটু হাসিল। পরে খানিকক্ষণ কান খাড়া রাখিয়া বলিল—এমন গান আরও কত আছে —অই শুন না, পেটমোটা পাতাম নাওয়ে কি গানখান হইতেছে—সামনে কলার বাগ, পূব-দুয়ারী ঘর। রাইতে যাইও বন্ধু, প্রাণের নাগর॥
আরেকখানা গান অনন্তবালার প্রতি সকলকে সচেতন করিয়া তুলিল—তীরের মত লম্বা নাও, কিন্তু চলিতেছে ধীরে ধীরে; চলিতেছে আর গাহিতেছে—ঝিয়ারীর মাথায় লম্বা কেশ, খোঁপা বান্ধে নানান বেশ, খোঁপার উপর গুঞ্জরে ভোমরা॥ গাঙে আইলে আঞ্জন মাঞ্জন, বাড়িতে গেলে কেশের যতন, ঝিয়ারী জানি কোন পীড়িতের মরা॥