তুই আয়। বাপের ঘরের হইয়া থাকিস তো, অখনই আয়। আশপড়সীর সামনে দিনে পরেই তরে আমি ঘরে নিতে পারি, তুই আয়।’
তার গলা শুনিয়া মঙ্গলার বউ, দয়ালচাঁদের বিধবা ভগিনী, কালোবরণের মা সকলেই বাহির হইল। তার চীৎকারের কারণ শুনিয়া ওদিকে মঙ্গলার ছেলে মহন, রামদয়াল গুরুদয়াল তারা দুই ভাই, লাঠি লইয়া ছুটিয়া আসিল। কিন্তু অশ্বিনী ততক্ষণে পাড়া ছাড়াইয়া বাজারে পা দিয়াছে।
‘কিরে মহন, কি অ সাধুরবাপ মধুরবাপ! ইটা আমার বাপের দেশ ভাইয়ের দেশ। ইখানে আমি কারুরে ডরাইয়া কথা কই না। ইখানে আমারে যেজন আজ্নাইব, এমন মানুষ মার গর্ভে রইছে। আমার কথা ছাড়ান দেও, আমি কই মালোপাড়ার কথা। দিনে দিনে কি হইল কও দেখি?’
রামদয়াল গুরুদয়াল সকলেই খুব চটিল এবং পাড়ার লোককেও চটাইল, আর তাকে সমুচিত শাস্তি দিবে বলিয়া সকলে সঙ্কল্পও করিল। কিন্তু যাত্রার মহড়াতে সে যখন দরাজ গলায় গানে টান দিল, ‘হরির নামে মজে হরি বলে ডাক, অবিরাম কেন কাঁদবে বেটী-ঈ-ঈ-।’ তখনই মালোদের রাগ পড়িয়া গেল। কেবল মোহনের মনে সুবলার বউয়ের কথাগুলি জ্বলন্ত অঙ্গারের মত জ্বলজ্বল করিতে লাগিল।
মালোদের নিজস্ব একটা সংস্কৃতি ছিল। গানে গল্পে প্রবাদে এবং লোকসাহিত্যের অন্যান্য মালমসলায় সে সংস্কৃতি