সে ছোটবেলা গল্প শুনিয়াছে। কোন এক সাধু খড়ম পায়ে দিয়া এই তিতাসের বুকের উপর দিয়া হাঁটিয়া পার হইয়া যাইত। সেটা শুধু মন্ত্রবলেই সম্ভব হইয়াছিল। পাঠকের নিকট শুনিয়াছে, বিশাল যমুনা নদী, অগাধ তার জলরাশি; আর ঝড়ে বৃষ্টিতে দুর্যোগপূর্ণ রাত। বাসুদেব কৃষ্ণকে লইয়া জলে নামিল এবং খাপুর খুপুর করিয়া হাঁটিয়া পার হইয়া গেল। সেটা শুধু তারা দেবতা বলিয়াই সম্ভব হইয়াছিল।
আর এখানে দিনে-দুপুরে। চর্ম-চোখের সামনে। জালটা ফেলিতেই তার বাঁশ এই মাঝগাঙেও খুচ্ করিয়া তলার মাটিতে ঠেকিল। নৌকাটা কাঁপিয়া উঠিল, আর কাঁপিয়া উঠিল মোহন নিজে।
মোহন বাড়িতে আসিয়া স্তব্ধ হইয়া রহিল। পাড়ার লোকেরা ডাকাডাকি করিলে সহসা সে রাগে ফাটিয়া পড়িল, ‘মালোগুষ্টি যাত্রা করুক, কবি করুক, নাচুক, মারামারি কামড়াকামড়ি যা মন চায় করুক। আর ভাবনা নাই। গাঙ শুখাইছে।’
‘কি কইলি, আরে মহন কি কইলি? আরে অ মন-মোহন কি কইলি?’
‘কইলাম। গাঙে নাইম্যা দেখ গিয়া।’
এখান হইতে আধ মাইল দূরে যাত্রাবাড়ির টেক। নৌকা লইয়া তারা সেখানে গিয়া বাঁশ ফেলিল। এই টেক হইতে শুরু করিয়া এই অভাসিত চর উজানে কোথায় যে শেষ হইয়াছে, তার কিনারা করিতে পারিল না। যারা স্নান