পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৪৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩০
তিতাস একটি নদীর নাম

সে আনল আর নিবল না। মিছা না বাসস্তী। তুই মারবি আমারে?’

 ‘আমি মারুম তোর শত্তুরেরে। নিশত্তুরী। তুই লাউয়ের কাঁটা ফুইট্যা মর্, তুই শুকনা গাঙে ডুইব্যা মর্।’

 দুইজনের মনই হালকা হইয়া গেল।

 ‘অনন্তর কথা জানবার মনে লয় না?’

 ‘অনন্ত? ও অনন্ত! অনন্ত অখন কার কাছে থাকে?’

 —অনন্ত কি এখনও তেমন ছোটটি আছে যে, কারো কাছে থাকিবে। সে কত বড় হইয়াছে। শহরে থাকিয়া এলে-বিয়ে পাশ করিয়াছে। দাদা পোনার ভার লইয়া আসিতে দেখিয়া আসিয়াছে। কত কথা বলিয়াছে। ভদ্রলোকের সঙ্গে থাকে। দেখিতেও হইয়াছে ঠিক যেন ভদ্রলোক।

 —সুবলার বউ কেমন উদাস হইয়া যায়: ভদ্রলোকের সঙ্গে থাকে! ভদ্রলোকে যদি তারে যাত্রা শিখাইয়া নষ্ট করিয়া ফেলে।

 —আ লো, না লো, তারা বাজারের ভদ্রলোক না, তারা পড়ালেখার ভদ্রলোক। তোর একখানা আমার একখানা কাপড় কিনিয়া দিয়াছে। আমারখানা আমার পরণে তোরখানা ঐ ‘টানে’। স্নানের শেষে একেবারে কোমরে গুঁজিয়াই বাড়ি যাইবি।

 সুবলার বউ হঠাৎ আনমনা হইয়া যায়। কি ভাবিতে থাকে। কথা বলে না।

 ‘কি লা বাসন্তী, মনে বুঝি মানে না। আমারও মানে