হইবে। একজন বয়স্ক লোকের দরকার। জলের উপর ছয় মাস চরিয়া বেড়াইতে হইবে। তিলকচাঁদ প্রবীণ জেলে। একটু বেশী বুড়া। তা হোক। সঙ্গে দুইজন জোয়ান মানুষ ত রহিলই।
রাব-তামাক মাখিয়া গুল করিতে করিতে কিশোরের বাপ বলিল, ‘তিলকচাঁদ জানেশুনে। তারে নে। গাঁওএর নাম শুকদেবপুর। খলার নাম উজানিনগরের খলা। মোড়লের নাম বাঁশিরাম মোড়ল।’
একদিন ঊষাকালে তিনজনে নৌকায় উঠিল।
বিদায় দিবার জন্য নদীর পারে যারা গেল, তাদের সংখ্যা সামান্য। একজন আধৰুড়ি–কিশোরের মা। আর একজন বাসন্তীর মা, আর তার মেয়ে বাসন্তী—এগারো বছরের কুমারী কন্যা।
বুড়ি বলিল, ‘আ মাইয়ার মা, জোকার দেও না।’
বুড়ির ঠোঁটে জোকার বাজে না। বাসন্তী ও তার মা জোকার দিল। দেড়জনের উলুধ্বনি বলিয়া তাহা ঊষার বাতাসকে কাঁপাইল মাত্র। কলরব তুলিল না। কিশোরের বাপ নদীতীরে যায় নাই। ঘরে বসিয়া ঘনঘন কেবল তামাক টানিতেছিল। ছেলেকে বিদায় দিয়া ঘরে আসিয়া বুড়ি কাঁদিয়া উঠিল।
পাঁচপীর বদরের ধ্বনি দিয়া প্রথম লগি-ঠেলা দিল তিলক। সুবল হালের বৈঠা ধরিল। তার জোর টানে নৌকা সাপের মতো হিস্ হিস্ করিয়া ঢেউ তুলিয়া ঢেউ ভাঙ্গিয়া চলিল। তিলকচাঁদ গলুইয়ে গিয়া দাঁড় ফেলিয়াছে। কিন্তু তার দাঁড়ে