তিলক ক্ষেপিয়া উঠিয়া বলিল, ‘হ, শিক্ষিৎ হইলে শাদি-সম্বন্দ কর্ব কি না! আরে সুব্লা, তুই বুঝ্বি কি! তারা মুখে মিঠা দেখায়, চোখ রাখে মাইয়া-লোকের উপর।’
ব্যাপারটার মীমাংসা করিয়া দিল কিশোর; হাসিয়া বলিল, ‘না তিলকচাঁদ, না। চোখ রাখে বড় মাছের উপর। যা শোনা যায় তা না। তা হইলে কি জাইন্যাশুইন্যা নগরবাসী এই গাঁওএ সমন্দ ঠিক করত।’
‘কিশোরদাদা, চল মাইয়ারে একবার দেইখ্যা যাই। বাড়ি চিন নি?’
‘বাড়ি চিনি না, কেবল নাম জানি,—ডোলগোবিন্দর বাড়ি।’
মেয়েরা দিনের শেষে জল ভরিতে আসিয়াছে। দলে দেখা গেল কয়েকটি কুমারী কন্যাকে।
কিশোর চোখ টিপিয়া বলিল, ‘গিয়া কি করবি? এর মধ্যে থাইক্যা দেইখ্যা রাখ’।
সারারাত সুখে ঘুমাইয়া তারা ঊষার আলোকে নৌকা খুলিয়া দিল।
ভৈরব খুব বড় বন্দর। জাহাজ নোঙর করে। নানা ব্যবসায়ের অসংখ্য নৌকা। কোনো নৌকাই বেকার বসিয়া নাই। সব নৌকার লোক কৰ্ম-চঞ্চল। নৌকার অন্ত নাই।