ছাড়া পাইলেও সাধুর হাতে ছাড়ান নাই। তাই ঘাটে কিছু না কইয়া জানাইয়া দিলাম সাধুরে।’
খাওয়ার পর সাধু ধরিল, আজ রাতটুকু থাকিয়া যাও। একটু আনন্দ করিবার বাসনা হইয়াছে।
তিলক বলিল, ‘আম্রা ত বাবা গান জানি না।’
‘জান না! কোন্ জায়গাতে বিরাজ কর তোমরা?’
‘গ্রামের নাম গোকনঘাট—’
‘আমি সেই কথা কই না। আমি কই, তোমরা বিরাজ কর বৃন্দাবনে না কৈলাসে—তোমরা কৃষ্ণমন্ত্রী না শিবমন্ত্রী।’
তিলকের সেই কোন যৌবনকালে গুরুকরণ হইয়াছিল। গুরু তার কানে কৃষ্ণমন্ত্রই দিয়াছে। যদিও সে দীক্ষা অনুযায়ী কোন কাজই আজ পর্যন্ত করিয়া উঠিতে পারিল না, তবু গুরুর তিন আখরের মূলমন্ত্র ভোলে নাই। সাধুর প্রশ্নে সে একটুও ইতস্তত না করিয়াই বলিল, ‘আম্রা বাবা কিষ্ণমন্ত্রী।’
‘এই দেখ, গুরু মিলাইছে। আনন্দ করার গানে ত জানা-অজানার কথা উঠে না বাবা, কেবল নামের রূপ-মাধুরী পান করতে হয়। ষোল নাম বত্রিশ আখরের মাঝে প্রভু আমার বন্ধন-দশায় আছে। শাস্ত্রে কয় বৃন্দাবনে অপ্রাকৃত মদনমোহন। বিবর্তবিলাসের কথা। সে হইল নিত্য-বুন্দাবনের কথা। তিনি লীলা-বৃন্দাবনে আইসা সুবলাদি সখা আর ললিতাদি সখীসহ আদ্যাশক্তি শ্রীমতী রাধিকারে লইয়া লীলা কইরা গেছে। সেই লীলা-বৃন্দাবনে অখন আর তান্রা নাই। আছেন নিত্য-বৃন্দাবনে। সেই নিত্য-বৃন্দাবন আছে এই