৵৹
বন্ধুরা রামমোহন লাইব্রেরীর হাতে তুলিয়া দিয়াছেন। সাহিত্য, দর্শন ও চারুকলা বিষয়ক এমন একটি সুচিন্তিত ও মনোজ্ঞ সংগ্রহ সচরাচর দেখা যায় না। লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষ এই সহস্রাধিক গ্রন্থ সঙ্কলনকে একটি পৃথক বিভাগে রক্ষা করিয়াছেন।
এই প্রবল জ্ঞানলিপ্সা অদ্বৈতের মধ্যে বালককাল হইতেই দেখা গিয়াছিল। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া হইতে সামান্য দূরে একটি দরিদ্র মালোপরিবারে অদ্বৈতের জন্ম হয়। এই অধ্যবসায়ী বালক তাহার স্কুল জীবনের প্রথম পরীক্ষাগুলি বৃত্তি পাইয়া পাশ করিয়াছিল। পিতামাতা আর দশটি মালোছেলের মত ইহারও ভরণপোষণের কোন সুব্যবস্থা করিতে পারেন নাই। পাঁচ মাইল দূরের জেলেপল্লী হইতে এই বালক যখন ধূলিধূসর পায়ে স্কুলে আসিয়া নির্দিষ্ট স্থানটিতে উপবেশন করিত, তখন তাহার বালক সহাধ্যায়ীরা না হউক, অন্ততঃ কয়েকজন সহৃদয় শিক্ষক ছাত্রের মলিন মুখ দেখিয়া তাহাতে উপবাসের চিহ্নগুলি পড়িয়া ফেলিতে পারিতেন।
শিশুকাল হইতে এই বালক আত্মার যে দুশ্চর তপস্যায় ব্রতী হইয়াছিল তাহার সিদ্ধি-অসিদ্ধির অনুভব আমাদের নাই। তবে নেহাৎ ছোট বয়স হইতেই তাহার সাহিত্যিক কৃতিত্বগুলি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল। সেই বয়সে যতটুকু পড়িবার কথা অদ্বৈত তাহাপেক্ষা অনেক বেশি পড়িয়াছিলেন, এবং নানা পত্র-পত্রিকায় গল্প, প্রবন্ধ, কবিতাদি লিখিয়া নানা পুরস্কারও পাইয়াছিলেন। স্কুলের শিক্ষা শেষ হইলে তাহার শুভানুধ্যায়ী বন্ধু ও শিক্ষকেরা পুরস্কারলব্ধ ধাতুখণ্ডগুলি বালকের বুকে আঁটিয়া দিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য তাহাকে কুমিল্লা পাঠাইয়া দেন।
নানা প্রতিকূল কারণে কুমিল্লা কলেজে অদ্বৈতের পড়াশুনা বেশিদূর অগ্রসর হইতে পারে নাই। তারপর নবশক্তি প্রকাশের কালে সম্ভবত