হাতে জালগুলি, নৌকাগুলি আগের মত ঠিক করিয়া লইবে। যথাকালে বর্ষার ঢল নামিয়া নদীটাকে আবার যৌবনবতী করিয়া দিবে। ইহারা মরিবে না। কিন্তু আমরাও কি মরিব! আমাদের গাঁয়ের মালোদের কারো খেত খামার নাই। কিন্তু তিতাস নদী আছে। তাকে শোষণ করিবে কে!
‘আরে, অ কিশোর, তামুক পাওয়া যায় কই! এক ছিলুম তামুক।’ তিলক এই বলিয়া কিশোরের ধ্যান ভঙ্গ করিল।
সন্ধ্যার পর গানের আসর বসিল।
প্রথম গান তুলিল তিলক। সুবল গোপীযন্ত্র বাজাইল। কিশোর কেবল হাততালি দিয়া মাথা দুলাইয়া তাল রাখিয়া চলিল।
কৃষ্ণমন্ত্রী শিবমন্ত্রী দুই মতের লোকই আসিয়াছে। প্রথমে আসর-বন্দনা গাওয়ার পর দেখা গেল, এক কোণে কয়েকজন গাঁজার কল্কে সাজাইতেছে। তিলক ও-জিনিস কালেভদ্রে গ্রহণ করিয়া থাকে। এবারও এক টান কসিল। নাক দিয়া ধোঁয়া ছাড়িল। তারপর সুবলের দিকে রক্তচক্ষু করিয়া বলিল, ‘বাজাও’।
সুবল গোপীযন্ত্র পেটে ঘসিয়া তাল ঠুকিল।
মোড়ল মাঝ-আসরে বসিয়া ছিল। তার দিকে হাত বাড়াইয়া তিলক গান জুড়িল, ‘কাশীনাথ যোগিয়া—তুমি নাম ধর নিরাঞ্জন, সদাই যোগাও ভূতের মন, ভূত লইয়া কর খেলন, শিঙ্গা ডম্বুর কান্ধে লয়ে নাচিয়া’—