পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
তিতাস একটি নদীর নাম

 ‘বেশ, আমিই জিগাই।’

 বিচারকের সামনে আসামীর মত, এক ফোঁটা মেয়েটার সামনে জোয়ান কিশোর এতটুকু হইয়া গিয়া কোনো রকমে বলিল, ‘বিদেশী মানুষ। এ দেশের এই ফুলেরে চিন্‌লাম না। নামখান নি কইয়া যাইতে পার।’

 মেয়েটি লজ্জায় উচ্ছলিত হইয়া বলিল, ‘মুগরাচণ্ডী। এর নাম মুগরাচণ্ডী ফুল।’ বলিয়া, কিশোরের চোখের দিকে চাহিল। কিন্তু চোখ আর নামাইতে পারিল না। সর্পমুগ্ধের মত চাহিয়া থাকিয়াই পরনের বসন-আঁচলে বুকের শিশু স্তনদুটিকে ঢাকিয়া দিল। তারপর ভয়-পাওয়া হরিণীর মত বড় বড় পা ফেলিয়া একটা ঘরের আড়ালে চলিয়া গেল।

 সুবল কিছু টের পাইয়া বলিল, ‘যা কও দাদা, তোমার বাসন্তীর মত একটা মাইয়াও কিন্তু শুকদেবপুরে দেখলাম না।’

 ‘আমার বাসন্তী! তুই কি কইলি সুব্‌লা?’

 ‘তোমার সঙ্গে বিয়া হইব। এই ক্ষেপের টাকা লইয়া দেশে গেলেই তোমার সঙ্গে বিয়া হইব। তোমার বাসন্তী কমু না, তবে কি আমার বাসন্তী কমু?’

 কিশোর হাসিলঃ ‘নারে সুব্‌লা, না, ঠিসারার কথা না। বাসন্তীরে আমার, তোর লগেই সাতপাক ঘুরাইয়া দেমু।’

 ‘মনরে চোখ ঠার’ কেনে কিশোর দাদা? বাসন্তী যে তোমার হাঁড়িত্ চাউল দিয়া রাখ্‌ছে—তুমি ত কম জান না।’

 ‘নারে সুব্‌লা, আমার মন যেমন কয়, কথাখান ঠিক না। যারে লেংটা থাইক্যা দেখতাছি—ছোটকালে যারে কোলে