‘মাছ দিলেই যাই। বাস করতে কি আইছি?’
‘এই নেও চাইর পয়সার মাছ। এইবার যাও।’
‘মাছ পাইলাম, কিন্তু মানুষ ত পাইলাম না। তুমি মনের মানুষ।’
‘নাগরালি রাখ। আমার তিলকের বড় রাগ।’
‘রাগের ধার ধারি না। মনের মানুষ থুইয়া যাই, শেষে বুক থাপড়াইয়া কান্দি। অত ঠকাঠকির বেসাতি আমি করি না।’
কিশোরের হাসি পাইল। বলিল, ‘এক পলকে মনের মানুষ হইয়া গেলাম। তোমার আগের মনের মানুষ কই?’
‘উইড়া গেছে, সময় থাকতে বান্ধি নাই, তোমারে সময় থাকতে বান্ধ্তে চাই।’
‘কি তোমার আছে গো বাদ্যানী, বান্ধ্বা কি দিয়া?’
‘সাপ দিয়া। ঝাঁপিতে সাপ আছে—’
বেদেনী ঝাঁপি খুলিয়া দুই হাতে দুইটা সাপ বাহির করিয়া আনিল। আগাইয়া দিল কিশোরের গলার কাছে।
কিশোর ভয় পাইয়া বলিল, ‘অ বাদ্যানী, তুমি তোমার সাপ সরাও। বড় ডর করে।’
‘সরাইতে পারি, যদি আমার কথা রাখ।’
‘কি কথা, কও না।’
‘আর দুইটা মাছ ফাও দেও—’
‘এই নেও!’ কিশোর অপ্রসন্ন মুখে কতকগুলি মাছ তুলিয়া দিয়া বলিল, ‘এইবার তুমি যাও।’