পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
তিতাস একটি নদীর নাম

লাল হইয়া সে চোখ নত করিল। তাকে বাঁচাইল তার মা। মাথার কাপড় একটু টানিয়া সলজ্জভাবে তার মেয়েকে নিজের বুকে আশ্রয় দিল।

 কিশোরের ধ্যান ভাঙ্গিল সুবল। হাতে একটা ঝাঁকুনি দিয়া বলিল, ‘অ দাদা, গানের আসরে চল।’


 শুকদেবপুরের অর্ধেক পুরুষ মাছধরায় গিয়াছে। মোড়ল গিয়াছে একটা শুক্‌না বিল লইয়া বাসুদেবপুরের লোকদের সঙ্গে পুরানো একটা বিবাদ মিটাইতে। শুকদেবপুরের নারীরা আসিয়া খলার নারীদের সহিত মিশিল। পুরুষেরাও আসিল ঘরের দরজা বন্ধ করিয়া।

 পুরুষেরা কতক্ষণ রঙ-মাখামাখি করিয়া শ্রান্তদেহে চাটাইয়ের উপর বসিয়াছে। ওদিকে মেয়েদের রঙ-মাখামাখির পালা চলিতেছে, এদিকে পুরুষদের হোলি-গান শুরু হইয়াছে। একজনকে সাজাইয়াছে হোলির রাজা। তার গলায় কলাগাছের খোলের মালা, মাথায় কলাপাতার টোপর, পরণে ছেঁড়া ধুতি, গায়ে ছেঁড়া ফতুয়া। মাঝে মাঝে উঠিয়া কোমর বাঁকাইয়া নাচে, আবার বসিয়া বিরাম নেয়। বুড়া মানুষ।

 বহুদিন পরে আনন্দের আমেজ পাইয়া তিলকের এইরূপ হোলির রাজা হইবার ইচ্ছা করিতেছিল। কিশোরের কানে কানে বলাতে উত্তর পাইল, ‘আম্‌রা বিদেশী মানুষ। সভ্য হইয়া বইসা থাকাই ভাল। নাচানাচি করলে তারা পাগলা