সময় নাই। এখনই জাল ফেলিতে হইবে। শিক্ষিৎ লোকের দেশে থাকার যে কি কষ্ট, আর এদের মত দেশে থাকার যে কি সুখ, এ কথাগুলি অনেক যুক্তিপ্রমাণ দিয়া বুঝাইয়া দিবার কিশোরের সময় নাই। কিশোর কেবল শুনিয়া গেল।
আপ্নের সাথে একখান্ কুটুম্বিতা করতে চাই।’
কিশোরের সকল শিরা-উপশিরা একযোগে স্পন্দিত হইতে লাগিল।
বলিল, ‘আম্রা গরীব মানুষ, আম্রার সাথে কি আপ্নেরার কুটুম্বিতা মানায়?’
‘গরীব ত আম্রাও। গরীবে গরীবেই কুটুম্বিতা মানায়। কি কন্ আপ্নে?’
এই কুটুম্বিতার জন্য কিশোর যে কতখানি ব্যাকুল, এই অনভিজ্ঞ ছেলেটাকে কিশোর সে কথা কি করিয়া বুঝাইবে। না বলিয়া দিলেও সে কি নিজেনিজেই বুঝিয়া লইতে পারে না?
কিশোরের মনের আকাশে রঙ্ ধরিল। জানিয়া শুনিয়াও কেবল পুলকের তাড়নায় জিজ্ঞাসা করিল, ‘কি কুটুম্বিতা করতে চান্।’
‘বন্ধুস্তি, আপ্নের-আমার মধ্যে বন্ধুস্তি। কত দেশে ঘুরলাম, মনের মত মানুষ পাইলাম না। আপ্নেরে দেইখা মনে অইল, এতদিনে পাইলাম।’
‘আচ্ছা, বন্ধুস্তি করলাম, বেশ।’
মুখে-মুখের বন্ধুস্তি না। বাদ্য-বাজনা বাজাইয়া কাপড়-গাম্ছা বদল কইরা—’