পাতা:তীর্থ-সলিল - সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০৮).pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তীর্থ-সলিল

ঊর্ম্মিল জল স্থির হ’ল নদী থামিল মধ্য পথে,
স্থল কিবা জল হ’ল সমতল, চিনিব সে কোন্ মতে?
কিবা পশু পাখী কিবা সে মানব খাদ্য না পায় কেহ,
বিফলে চকোর বরফ খুঁটিল, মূষিক খুঁড়িল গেহ;
গবয়, চমরী, ছাগ, কস্তূরী খুলিতে না পারে মুখ,
হেন দুর্য্যোগে মিললাপা! তুমি কতই পেয়েছ দুখ!
একা গুহাতলে বন্দী ছিলাম বরফের কারাগারে,
ভিক্ষুজনের জীর্ণ বসন হঠায়েছে বাত্যারে;
স্খলিত-দন্ত শীত-শার্দ্দূল পলায়ে গিয়াছে দূরে,
তপের তাপেতে গলেছে তুষার অযুত ধারার ঝুরে!
দুরন্ত ঝড় হয়েছে শান্ত ঘন ধারা বরিষণে,
প্রণত পঞ্চভূতের শীর্ষ বুদ্ধের শ্রীচরণে।

বহ্ণির কুলে জন্ম আমার, ব্যাঘ্র সে জ্ঞাতি মম,
বসতি আমার তুষারাস্তৃত গিরি-চূড়া দুর্গম;
সিংহের কুলে জনমি’ শুনেছি সঙ্ঘের মহাবাণী,
যে পথে গেছেন অর্হত সবে আমিও সে পথ জানি;
মহাযান পথে যাত্রী আমরা মরণে ও মোরা ধন্য,
ওগো উপাসক! তথাগতে জান, চিত্ত কর না অন্য;
দুখ মাঝে সুখে ছিল মিললাপা না ছিল হৃদয়ে শোক,
ওগো উপাসক! তোমা সবাকার চির-কল্যাণ হোক্।

লামা মিললাপা।
১৬১