পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ର8 তৃণাঞ্চুর পাহাড়ে ঘেরা, অনেকগুলি ছোট ছোট দোকান, গোলার ঘর, একটা সরাই ও আছে । ইচ্ছে হোলে এখানে এসে থাকাও যায়। আমরা খুব তাড়াতাড়ি নামতে পারলাম না, যদিও প্ৰতিমুহূৰ্ত্তে ভয় হচ্চিল, মোটর ড্রাইভার হয়তো কি মনে করবে। বেচারী সারাদিন কিছু খায়নি। আম্বারা গ্রামটা দেখবার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু তার সময় ছিল না, তাড়াতাড়ি মোটর ছেড়ে সেই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে, কাটা পথটা ঘুরে রামটেক টাউনের মধ্যে ঢুকাল । পাহাড়ের ঢালুতে বন্য আতাবৃক্ষ অজস্ৰ, এখানে বলে সীতা ফল-নাগপুর শহবে যত আতাওয়ালী আতা ফিরি করে-তার সব আতাই ফলে সিউনি ও রামটেক পাহাড়ে । রাত বোধ হয় ৭টা কি ৭ টা । মন্দিরের ওপরে চবুতারায় বসে দূরে নাগপুরের বৈদ্যুতিক আলোকমালা দেখেছিলাম ঠিক সন্ধ্যায়-তাই নিয়ে প্ৰমোদীবাবুর সঙ্গে তর্ক হোল, আমি বালুম-ও কামটির আলো-প্ৰমোদ বাবু বলেন-না, নাগপুরের। কিনসী হ্রদের বাংলোতে খাবার খেয়েছিলাম। কিন্তু চা খাইনি। রামটেকের মধ্যে ঢুকে একটা চায়ের দোকানে আমরা গাড়ীতে বসে চা খেলাম। খুব জ্যোৎস্না উঠেচে-রামিটেকের পাহাড়ের ওপর সাদা মন্দিরটা জ্যোৎস্নায় বড় চমৎকার দেখাচে-চা খেতে খেতে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগলাম। আজ কোজাগরী পূর্ণিমা, এতক্ষণ বারাকপুরে 'আমার গায়ে বাড়ীতে বাড়ীতে শাক বাজচে। লক্ষ্মীপুজোর লুচিভাজার গন্ধ বার হচ্চে বঁাশবনের পথে—এতদূর থেকে সেসব কথা যেন স্বপ্নের মত লাগে। রামটেকের পথ দিয়ে মোটর ছুটুল। কিনসী হ্রদ থেকে মোটরে আসবার সময়ে যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম, তেমনি আনন্দ পেলাম। সামনে তখন ছিল আঁকাবঁকা, উচুনীচু পাৰ্বত্য প্রদেশের কঙ্করময় পথ, ডাইনে ছায়াবৃত অরণ্যেভরা শৈলমালা-এখন ঠিক তেমনি পথ দিয়ে মোটর তীরের বেগে gcts t(act-2 (NKi-Cit a glorious drive. রামটেক ষ্টেশনে নাগপুরের ট্রেনখানা দাড়িয়ে রয়েছে, সুতরাং বোঝা গেল এখনও সাড়ে আটটা বাজেনি। একটু গিয়ে প্ৰমোদবাবু মাইল ষ্টোনে পড়লেন-নাগপুর ২৮ মাইল, মানসার ২ মাইল । দেখতে দেখতে ডাইনে মানসারের বিরাট ম্যাঙ্গানিজের পাহাড় পড়ল-জ্যোৎস্নার আলোতে সুউচ্চ অনাবৃতকায় পাহাড়গুলো যেমনি নির্জন, তেমনি বিশাল ও বিরাট