পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণান্ধুর SCA সন্ধ্যাবেল এসে চেয়ারটাতে বসে চুপ করে ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল এই সব শীতের রাত্রে ছেলেবেলায় আমাদের বাড়ীর পেছনের ঘন বনে শিয়াল ডাকতো গভীর রাত্ৰে-সেই বিপদের ভয়, অজানার মােহ, গ্রাম জীবনের সৌন্দৰ্য্য-অদ্ভুত, অপূর্ব আরও মনে পড়লো ইসমাইল।পুরের জ্যোৎস্না রাত্রির সে অপার্থিব, weird beauty - সেই এক পূর্ণিমা-রাত্রির শুভ্ৰ জ্যোৎস্নার ঢেউয়ের নীচে আকন্দ গাছ • • • স্বপ্নে যেন দেখি • • • সেই কুমারদের বাড়ী ঢাক ঘোরাচ্ছে দাসু-পঞ্চাননতলায় কালীপূজাভগবান, কি অসীম বিচিত্ৰতা দিয়ে এই জীবন, আমার শুধু নয়, সকলের জীবন গড়ে তুলচে-ত কে দ্যাখে ? কে বোঝে ? ধন্যবাদ অগণিত ধন্যবাদ।--হে সৌন্দৰ্য্যস্রষ্টা মহাশিল্পী, তোমাকে অন্তরের প্ৰেম কি বলে জানাবো, ভাষা খুজে পাই না--- এতো শুধু পৃথিবীর সুখদুঃখের কথা লিখচি-তবুও তো আজ নাক্ষত্ৰিক শূন্যের কথা ভাবিনি, অন্য অন্য জগতের কথা তুলিনি। অন্য গ্ৰহ উপগ্রহের কথা ওঠাইনি • • • দূর দূরান্তরের কথা তুলিনি নতুন বৎসরের প্রথম দিনটাতে এবার মোটরে করে শ্ৰীনগর গেলুম। চালকী থেকে খুকীকে তুলে নিলুম, পরে গোপালনগরের বাজারে বন্ধুর ড্রাইভার গৌরকে হরিবোলা ঠিক করে দিলে। ড্রাইভারটা প্রথমটাতে মেঠো পথে যেতে চায় না। অবশেষে অনেক করে রাজী করানো গেল। সিমলাতে গিয়ে কালাকে ডাকতে পাঠানো গেল, সে নাকি ভাত রাধাচে । একটী ছোট মেয়ে জল নিয়ে এল বালতীতে করে। খাবার খেয়ে নিয়ে আমরা আবার হলুম। রওনা । শ্ৰীনগরের বনের মাথায় মটর ফুলের মত একরকম ফুল অজস্ৰ ফুটে আছে, এত চমৎকার লাগিছিল! আসবার সময় ডাইনে পশ্চিম আকাশে সূৰ্য্য অস্ত যাচ্ছিল-আকাশের কি চমৎকার রংটা যে ! রাত আটটার সময় পৌছে গেলুম কলকাতা, ঠিক চারটার সময় সিমলে থেকে ছেড়ে । এ যেন কেমন অদ্ভুত লাগে। Sense of space মানুষের ক্ৰমেই কেমন পরিবৰ্ত্তিত হয়ে যাচ্চে। -- এক শত বৎসর পূর্বে যা কিনা পাকা তিন দিনের পথ, গরু গাড়ীতে চার দিনের পথ ছিল ! কে জানে R