পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

G8 फु°ाङ्कन्न জগৎ, সে সব তো আলাদা বিশ্ব, তাতে তো অপূর্ব অজ্ঞাত সব জীবন-ধারাআমার জীবনও তো, কত দূর পথ চেয়ে কত অনন্ত সৌন্দৰ্য্যস্তম্ভের মধ্যে দিয়ে কাটুবে তা কে জানে ? • • • এই বড় জীবনটা আমার--- মানুষের মনে এই জ্ঞানটা শুধু পৌছে দিতে হবে যে, সে ছোট নয়, সে বড়, সে অনন্ত। যদি যুগে যুগে আসি যাই তা হোলেও তা ওরকম কত কালবৈশাখী, কত মুচুকুন্দ চাপার গন্ধ, কত টক কলায়ের ডাল আমার হবে। কিন্তু প্ৰকৃতির নিরাবরণ মুক্ত রূপের স্পর্শে এই অনুভূতি খোলে। সুপ্ত আত্মা জাগ্রত হয় চৈত্র দুপুরের অলস নিম ফুলের গন্ধে, জ্যোৎস্না-ভরা মাঠে, আকন্দ ফুলের বনে, পাখীর বেলা-যাওয়া উদাস গানে, মাঠের দূর পারে সূৰ্য্যাস্তের ছবিতে, ঝরা পাতার রাশির সোদা সোদা শুকনা শুকনা সুবাসে। প্ৰকৃতি তাই আমার বড় বিশল্যকরণী—মুত, মূচ্ছিত চেতনাকে জাগ্রত কৰ্ত্তে অত বড় ঔষধ আর নাই । আইনষ্টাইন বলেচেন বিস্মিত হবার ক্ষমতা একটা বড় ক্ষমতা। যে কোনো কিছু দেখে বিস্মিত হয় না, মুগ্ধ হয় না, সে মৃত সে বেঁচে নেই। আমাদের দেশের কেউ এ কথা বুঝবেন কি ? এই জন্যেই অল্প বয়সে আমাদের দেশে জীবনের ব্যবসায় দেউলে হয়ে পড়ে—নতুন বিস্ময়, নতুন অনুভূতি হয় না, নবতর জীবনের পথ চিরগুপ্ত রয়ে যায়। তাদের কাছে-মানুষ দমে যায় জানি-কিছুকাল তার মনে সব শক্তি হয় তো ক্ষীণতর হতে পারে মানি-কিন্তু জীবন্ত যে মানুষ, সে আবার জেগে উঠবে, সে আবার নবতর বংশীধ্বনি শুনবে—নব জীবনের সন্ধান পাবে। অপরাজিত প্ৰাণ-ধারার কোন অদৃশ্য উৎসমুখ তার আবার খুলে যাবে, বিজর ও বিমৃত্যু-আনন্দ তার চিরাশ্যামল মনে আবার আসন পাত বে। বিহার অঞ্চলে দেখোঁচি শীতের শেষে বনে আগুন দেয়, সব ঘাস একেবারে পুড়িয়ে ফেলে-কি জন্যে ? যাই জ্যৈষ্ঠের রৌদ্র পড়বে।-ওই দগ্ধ ঝোপ-ঝাপের গোড়া থেকে আবার নবীন, শ্যামল, সুকুমার তৃণরাজি উচ্ছসিত প্ৰাণ-প্ৰাচুৰ্য্যে বেড়ে উঠতে থাকবে-হু হু করে বাড়ে, পনেরো দিনের মধ্যে সারা কালো গোটা ঘাসের বন ঘন শ্যামশ্ৰী ধরে -এই তো জীবন, এই তো আমরতা। তাই ভাবি মাস, বছর ধরে মানুষের বয়স ঠিক করা কত ভুল। ১৩৩৮ সাল পড়ে গেল। আজ, আমার বয়স এক বৎসর বেড়ে গেল বটে হিসাব মত