পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণান্ধুর Gł6 কিন্তু আমি কি দশ বৎসর কিম্বা পনেরো বছর আগেকার সেই বালক নেই অল্পবিস্তর ?-- সেদিন গেছলাম রাজপুরে অনেক কাল পরে। মিনুর সঙ্গে দেখা হোল। আবার পুরোনো পুকুরের পথটা ধরে হাটলাম-বঁাশগুলো নীচু হয়ে পড়ে আছে—চড়কের সন্ন্যাসীর দল বাড়ী বাড়ী বেড়িয়ে বেড়াচ্চে। দুটোর ট্রেণে ফিরে এসে সাড়ে পাচটায় স্কুলের মিটিং কলুম। রসিদকে আজ डांgicनों 6श्ांव । পথে কোন জায়গায় ফুটন্ত মালতীলতার ফুলের গন্ধ, জারমলীন আপিসের কাছে-গোয়াড়ী-কৃষ্ণনগরের স্মৃতিটা হঠাৎ মনে পড়ল। সে দিন বন্ধু বলছিল-বাকি-করিমালি। পরিচিত নাম, বাবার মুখে ছেলেবেলায় শুনেছিলাম কবে-ভুলে গেছলাম, যুগান্ত পরে যেন কথাটা আবার শুনলাম বলে মনে হোল। অনেকদিন পরে আজ রবিবারটি বেশ কাটলো। শীঘ্রই গরমের ছুটী হবে, কাল রাত্রে বাইরের বারান্দায় বৃষ্টি পড়াতে বিছানা টানাটানি করে ভাল ঘুম হয় নি, উঠতে একটু বেলা হয়ে গেল। হাতমুখ ধুয়ে কলেজ স্কোয়ারের দোকানটাতে খাবার খেতে গেলুম-ওরা বেশ হালুয়া করে। তারপর গোলদীঘির মধ্যে বসে কামাতে লাগলুম একটা নাপিতের কাছে। ওদিকে অনেকগুলি গাছ, একটা গাছে সোদালি ফুল ফুটুেচে—এমন একটা অপরূপ আনন্দ ও উত্তেজনা এল মনে ফুটন্ত ফুলেভরা গাছটা দেখে—মনে হোল আর বেশী দেরি নেই, এক সপ্তাহ পরে ঐ রকম ফুলেভরা বন-মাঠে গিয়ে ‘অপরাজিত’-র শেষ অধ্যায়টা লিখবো—সত্যি জীবনে দেখেচি ভবিষ্যতের ভাবনায় সবসময়ই এত আনন্দ পাই ! ফিরে এসে অনেকক্ষণ বই লিখলুম। দুপুরে একটু ঘুমুবার চেষ্টা করা গেল—ঘুম আদৌ হোল না। বেলা আড়াইটার সময় দরজায় শব্দ শুনে খুলে দেখি নীরদবাবু। র্তার গাড়ী নীচেই দাড়িয়েছিল—দুজনে উঠে একেবারে দমদমায় সুশীলবাবুর বাগানে। সত্যি, ওদের সাহচৰ্য্য এত সুন্দর লাগে আমার--সত্যিকার প্রাণবন্ত সজীব মন ওদের । সেখানে বাইরের মাঠে চেয়ার পেতে বসে নানা বিষয়ের আলোচনা হোল-চা-পান সমাপন হোল । শান্তিনিকেতন থেকে অমিয় চক্ৰবৰ্ত্ত “পথের পাঁচালী” সম্বন্ধে লিখেচেন, ‘বই পড়ে গ্রামখানি দেখতে ইচ্ছা!