পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ তৃণাকুর সে যাক। এই চৈতন্যের ব্যাপকতার কথা বলছিলাম। এই মুক্ত প্রকৃতি, সবুজ ঘাসে মোড়া ঢালু নদীতীর, কাশবন, শিমূল্যবন, পাখীর ডাকনীল পৰ্বতমালা, অকুল সমুদ্র, অজানা মহাদেশ-এই হাসিমুখ বালক বালিকা, সুন্দরী তরুণী, স্নেহময়ী পত্নী, উদার বন্ধু, অসহায় দরিদ্রদল,-এই বিরাট মানব জাতির অদ্ভুত ইতিহাস, উখানিপ তন, রাজনীতির ও সমাজনীতির বিবৰ্ত্তন, এই বিরাট নক্ষত্ৰজগৎ, গ্রহ, উপগ্রহ, নীহারিকা, ধূমকেতু, উল্কা— জানা অজানা জাগতিক শক্তি,-এই X-ray, friar, Invisible rays, highly penetrating radiation,-sa মৃত্যুপারের দেশ, মৃত্যুপারের বিরাট জীবন—এই রহস্যে স্পন্দমান, অসীম, অদ্ভুত জীবনরহস্য-এই সৌন্দৰ্য্য, এই বিরাটত, এই কল্পনার মহনীয়তা,-এসবে যারা মুগ্ধ না হয়, গরু মহিষের মত ঘাস দানা পেলেই সন্তুষ্ট থাকে, যারা এই রহস্যময় অসীমতার সম্বন্ধে অজ্ঞ, নিদ্রিত ও উদাসীন রৈল-সোঁ হতভাগ্যগণ শাশ্বত ভিখারী-তাদের দৈন্য কে দূর কৰ্ত্তে পারবে ? মানুষের মত যত উদার হবে, যত সে নিজের চৈতন্যকে বিশ্বের সবদিকে প্রসারিত করে দিতে পারবে, অণুর চেয়ে অণু, মহানের চেয়েও মহান বিশ্ববস্তুর প্রতি আত্মবুদ্ধিকে যত জাগ্রত করে তুলতে পারবে—সে শুধু নিজের উপকার করবে না, নিজের মধ্যে দিয়ে সে শতাব্দীর সঞ্চিত অন্ধকারজাল ও জড়তাকে প্ৰতিভার ও দিব্যদৃষ্টির আলোকে প্রসারিত করে দিয়ে যাবে। সেই সত্য-সত্য নিত্যকালের মশালাচি । সেদিন চারু বিশ্বাসের বাড়ীতে অনেক রাত পৰ্য্যন্ত মিটিং হোল। রাত দশটার পরে সেখান থেকে রওনা হয়ে আসতে গিয়ে লাউডন ষ্ট্রীটের মোড়ে একটা টায়ার গেল ফুটে । মৌলালীর মোড়ে আবার মহরমের বেজায় ভিড়। অনেক কষ্টে রাত্রে বাড়ী পৌঁছলাম। ভোরে স্নান সেরে বসে আছি। নীরদবাবু গাড়ী নিয়ে এলেন। চা পান করে দমদম থেকে বেরুনো গেল। বনগার পথে এ গাড়ীরও একখানা। টায়ার গেল । বনগায়ে পৌছে বাজার করে বেলেডাঙ্গা পৌছুতে বেলা নয়টা। বটতলায় গিয়ে কাঠ কুড়িয়ে সবাই মিলে রোধে খেলাম। শ্যামাচরণ দাদাদের বাড়ী এলামসেখান থেকে নৌকা করে নকুদুলের ঘাট পৰ্য্যন্ত বেড়ালুম-সবাইপুরের ঘাটে স্নান কলুম। তারপরে সেদিন রাত্রে দমদমাতে ফিরে খেয়ে আবার এলুম। বাসাতে।