পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণান্ধুর brS গায়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের পাথরে উৎকীর্ণ লিপি আবিষ্কৃত হয়েচে-তাই দেখবার জন্য আমরা এখানে এসেছি। লেখাটা ভারী চমৎকার জায়গায় - একটা Limestone-crag-এর নীচে ছায়াভিরা জায়গায় প্ৰাকৃতিক ছোট একটা গুহা মত-তারই গায়ে লেখাটা । চারিধারের বন যেমন গভীর তেমনি সুন্দর-পথের মধ্যে জঙ্গলে কত ধরণের গাছ। আমলকী ও হরিতকীর বন-আমরা আমলকী ফল কুড়িয়ে খেতে খেতে এলাম। গ্রিণ্ডোল গায়ের পাটোয়ারী আমাদের জন্যে মুড়কী ও দুধ নিয়ে এল। উড়িষ্যার এই গভীর জঙ্গলে সেই প্ৰাগৈতিহাসিক যুগের শিলালিপি ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করেচে। জায়গাটা অতীব গভীর অরণ্যময়-কি অপূর্ব নীল আকাশ অরণ্যের মাথায়—কি অপূর্ব নিস্তব্ধতা-পাহাড়ের crag, তার ছায়ায় আমরা কতক্ষণ বসে রইলাম-ছেড়ে যেতে আর ইচ্ছে করে না-ইচ্ছে হয় না যে আর বেলপাহাড়ে ফিরি। আবার গাড়ীতে উঠি । আবার কলকাতায় যাই । গ্রিণ্ডোলা নামে একটা গা পাহাড়ের পাদদেশে-এইখান দিয়ে বিক্রমখোল যেতে হয়। আমরা বেলা দশটার সময় এখানে পৌঁছলাম । একটু পরেই পাটোয়ারী গাড়ী করে এল। গায়ের ‘গাউঠিয়া’ অৰ্থাৎ গ্রামপ্রধানের নাম বিম্বাধর-সে তাড়াতাড়ি আমাদের জন্যে দুধ ও মুড়কী নিয়ে এল খাবার জন্যে। একটু বিশ্রাম করে আমরা বিক্রমখোল রওনা হলাম-দেখাশুনো করে ফিরে আবার গায়েই এলাম। ওবেলাকার নাচের দল নাচ দেখালে। আমরা একটা ফটো নিলাম। আমাদের কোনো অদৃষ্টপূর্ব জীব ভেবে এখানকার লোকেরা ঝুকে পড়েচে-দলে দলে এসে আমাদের চারিপাশে দাড়িয়েচে । প্ৰমোদীবাবু মুখে সাবান মেখে দাড়ি কামাচ্চেন-এরা অবাক হয়ে চেয়ে আছে-এ দৃশ্য আর কখনও দেখেনি বোধহয় । ফটোগ্রাফ নেবার সুবিধের জন্যে নাচ হোল পথের ওপর-ঝম ঝম করচে রোদ-নাচওয়ালীদের মুখের ওপর বড় রোেব্দর পড়েচে দেখে আমি পরিমল বাবুকে তাড়াতাড়ি snapটা সেরে নিতে বলুম। নাচ গান শেষ হোল। প্ৰমোদবাবু, পরিমলবাবু ও কিরণ হেঁটে রওনা হলেন বেলপাহাড়ে। আমার পায়ে ফোস্কা পড়েচে বলে হাটুতে পারা গেল না । গরুর গাড়ীতে ওঁদের জিনিসপত্র নিয়ে আমি ঘণ্টাখানেক পরে রওনা হলাম । Y -.