পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আটখানা হইয়া তাঁতি বলিল,—“আমি এইক্ষণেই যাইতেছি। কাপড় পরিয়া আসি।” তাঁতি কাপড় পরিয়া তৎক্ষণাৎ ঘর হইতে বাহির হইল। তিনজনে পুনরায় সেই কৃপাভিমুখে চলিলেন। কৃপের ধারে পৌঁছিয়া, আঁতি আসন করিয়া গান আরম্ভ করিলেন; ব্ৰাহ্মণ ও আমীর কানে অঙ্গুলি দিয়া কিঞ্চিৎ দূরে গিয়া দাঁড়াইলেন। যখন তাতির গান কূপের ভিতর গিয়া প্ৰবেশ করিল, তখন ঘ্যাৰ্ঘো ভাবিল—“মনের খেদে জ্বর-জুর হইয়া বিরলে কূপের ভিতর বসিয়া আছি, এখানে আজ আবার এ কি ভীষণ ব্যাপার! সেকালে কবির চিতেন শুনিয়াও প্ৰাণ ধরিতে পারিয়াছিলাম, তাহাতেও প্ৰাণ বাহির হয় নাই; আজ যে দেখিতেছি, মহাপ্ৰাণী ধড়পড় করিয়া বাহির হয়।” ঘ্যাৰ্ঘো। তবুও কিন্তু সহজে কৃপা হইতে বাহির হয় নাই। যখন দেখিল, তাতির গানে নিতান্তই প্ৰাণ বাহির হইয়া যায়, তখন করে কি? কাজেই বাহির হইতে হইল। হামাগুড়ি দিয়া কৃপ হইতে বাহির হইল। ঘ্যাঘো বেঁটে-খেটে, হাড়-ওঠা বুড়ো সুড়ো ভূত। মনের খেদে দেহ তার এতই জ্বর-জুর হইয়াছিল যে, তাহার চক্ষু, মুখ, নাসিকা হইতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিৰ্গত হইতেছিল। কৃপা হইতে বাহির হইয়া ভূত একদিকে উদ্ধশ্বাসে পলাইবার উদ্যোগ করিতেছে, এমন সময়ে ব্ৰাহ্মণ ও আমীর আসিয়া তাহার সম্মুখে দাড়াইলেন। ব্ৰাহ্মণ তাহাকে বলিলেন, — “ঘ্যাঘো, তুমি পলাইও না, তোমার ভয় নাই, ঐ দেখি ত্যাতি ভায়া চুপ করিয়াছে। আর পলাইবে বা কোথা? যেখানে যাইবে, সেইখানে গিয়া তীতি ভায়া গান জুড়িয়া দিবেন। তার চেয়ে, তোমাকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করি, সত্য সত্য উত্তর দাও, আমরা তাঁতি ভয়াকে লইয়া ঘরে ফিরিয়া যাই । ঘ্যাঘো ব্ৰাহ্মণের মুখপানে চাহিল আমীরের মুখপানে চাহিল, তাতির মুখপানে চাহিল। দেখিল, গলা পরিষ্কার করিয়া তাত্নিস্ট্রেীর একটি গান আরম্ভ করিবার উদ্যোগ করিতেছে। তাহা দেখিয়াই ঘ্যাঘোর আত্মা- য়া যাইল। সে বলিল,—“আচ্ছা কি বলিবে বল, কি জিজ্ঞাসা করিবে?” ব্ৰাহ্মণ বুলিষ্ট...। —“লুলু নামক তোমাদের যে ভূত আছে, সে এই আমীরের স্ত্রীকে লইয়া গিয়াছে। রাখিয়াছে, তুমি বলিতে পাের? আর কি করিয়াই “অনেকদিন ধরিয়া ঘোর দুঃখে জ্বর-জুর হইয়া আমি রর সংবাদ বড় কিছু রাখি নাই। তবে তাতির গান যদি আর না শুনা, তাহা হইলে অনুসন্ধান করিয়া বলিতে পারি।" ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, —“অনুসন্ধান করিতে যাই বলিয়া তুমি পলাইয়া যাইবে, শেষে আর তোমার দেখা পাইব না। আমরা তেমন বোকা নাই যে, তোমাকে ছাড়িয়া দিব।” ঘ্যাঘে উত্তর করিল,-“পলাইয়া আর কোথায় যাইব? যেখানে যাইব, সেইখানে গিয়া তোমরা তাতির গান জুড়িয়া দিবে। তাছাড়া আমীরের স্ত্রী কোথায়, অনুসন্ধান না করিয়াই বা আমি কি করিয়া বলি?” ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, —“সত্য কর যে, শীঘ্য ফিরিয়া আসিবো?” ঘ্যাঘো বলিল—“আমি সত্য বলিতেছি, শীঘ্য ফিরিয়া আসিব ।” তখন ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, “আচ্ছা, তবে যাও, শীঘ আসিও, আমরা এখানে বসিয়া রহিলাম।” ঘ্যাঘো বলিলেন—“রও, আমি আমার বড় নাগরা জুতা যোড়াটি পায়ে দিয়া আসি। সে জুতাটি পায়ে দিলে আমি বাতাসের উপর উত্তম চলিতে পারি। মুহূৰ্ত্তের মধ্যে সমুদয় ভারতভূমি ভ্ৰমণ করিতে পারি।” এই বলিয়া ঘ্যাঘো পুনরায় কূপের ভিতর যাইল, নাগরা জুতা পায়ে দিয়া বাহিরে আসিল, বাতাসের উপর উঠিয়া হনু-হন করিয়া অতি দ্রুতবেগে চলিতে লাগিল; শীঘ্রই অদৃশ্য হইয়া গেল। ব্ৰাহ্মণ, আমীর ও তাঁতি সেইখানে বসিয়া রহিলেন । ঘ্যাঘো ফিরিয়া আসে কি না, এই কথা লইয়া আলোচনা করিতে লাগিলেন। সকলেই একদৃষ্টি আকাশপানে চাহিয়া রহিলেন। “কখনৃ আসে—কখন আসে” এই কথা yw8 fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**