পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইয়া পড়ে, পাছে সে আশাকণাটুকুও উড়িয়া যায়। আমীর কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইলেন, বলিলেন, —“চাহিয়া দেখ! সত্য সত্যই আমি আসিয়াছি। ভয় নাই, ঈশ্বরের কৃপায় নিশ্চয় এ ঘোর বিপদ হইতে আমরা মুক্ত হইব।” এই বলিয়া একেবারে স্ত্রীর নিকটে গিয়া তাঁহার গলা জড়াইয়া ধরিলেন, স্ত্রীও তাঁহার গলা ধরিলেন। এইভাবে বসিয়া দুই জনে অনেকক্ষণ নীরবে: কাদিতে লাগিলেন । তাহার পর আমীর চক্ষু মুছিয়া বলিলেন, —“আর কীদিও না। এখন এখানকার সকল কথা আমাকে বল। প্রথম আমাকে বল, ভূত তোমাকে কি করিয়া ধরিয়া আনিল ।” আমীর-রমণী বলিলেন, —“তাহার আমি কিছুই জানি না। ঘরের ভিতর হইতে যেই বাহিরে আসিয়া পা দিলাম, তুমি কি ভিতর হইতে বলিলে, শুনিতে পাইলাম। তারপর যেন একটা ঝড় আসিয়া উড়াইয়া লইয়া চলিল। আমি অজ্ঞান সংজ্ঞা শুন্য হইয়া পড়িলাম। কতক্ষণ অজ্ঞান ছিলাম, বলিতে পারি না। যখন প্ৰভাত হইল, চক্ষু মেলিয়া দেখি, দিন হইয়াছে, সম্মুখে এক বিকট মূৰ্ত্তি বিষমদেহ নিরাকার রাক্ষস। তাহাকে দেখিয়া পুনৰ্ব্বার অজ্ঞান হইয়া যাইলাম। তারপর পুনরায় যখন জ্ঞান হইল, তখন দেখিলাম, রাত্রি হইয়াছে, ঘরে আর কেহ নাই, একেলা পড়িয়া আছি। এই প্ৰদীপটি মিটু মিটু করিয়া জুলিতেছে, নানারূপ আহারীয় দ্রব্য ঘরে রহিয়াছে। আমি কিন্তু কিছুই খাইলাম না। মনে করিলাম, অনাহারে প্রাণত্যাগ করিব। তাহার পরদিবস প্রাতঃকালে সেই বিকটমূৰ্ত্তি আবার আমার কাছে আসিলু এবার আমি তাহাকে দেখিয়া অজ্ঞান হই নাই। বড়ই ভয় হইয়াছিল সত্য, অজ্ঞান ও হইয়াছিল সত্য, কিন্তু সাহস করিয়া বুক বঁধিলাম। মনে করিলাম, শুনিতে সে কে, আর কেনই বা আমাকে এখানে লইয়া আসিয়াছে। সেই বিকটমূৰ্ত্তি আমার য়া বলিল,—সুন্দরি! এক্ষণে আর তুমি আমীরের রমণী নও, এক্ষণে তুমি আমার গুহিণী। তোমার স্বামী নিজে তোমায় আমাকে দান র সহিত তোমার নিকা দিয়া দিবেন।” সাহসের উপর ভর করিয়া আমি বলিলাম,-“তুমি কে? স্বামী আমায় তোমাকে কি করিয়া দিলেন?” সে বলিল,— ‘আমি ভূত। আমার নাম লুলু। আমি সামান্য ভূত নই, আমি একজন সভ্য ভব্য নব্য ভূত। আর এই ধনসম্পত্তি, এই গিরিগহবর। আমার; আমি দুখিরাম চণ্ডালের ভূতগিরি করিতেছি। ভূতসমাজে আমি অতি প্ৰবল-পরাক্রান্ত বলিয়া পরিচিত, আমার মান-মৰ্যাদা রাখিতে আর স্থান নাই।” আমি বলিলাম,-“স্বামী আমায় তোমাকে দিয়াছেন, একথা একেবারেই মিথ্যা তারপর মানবী হইয়া ভূতের রমণী কবে কে হইয়াছে? দেখ, আমরা খোদা পরস্ত মুসলমান, ভূতপরস্তাদিগের মত শয়তানের শাগরেদ নই। আমার প্রতি অত্যাচার করিলে খোদা তোমাকে দণ্ড করিবেন।” “এইরূপ প্রতিদিন ভূতের সহিত বাদানুবাদ হয়। ভূত কিন্তু আমার গায়ে হাত দিতে সাহস করে নাই। প্রথম কয়েকদিন আমি আহার-নিদ্রা একেবারেই পরিত্যাগ করিয়াছিলাম। তারপর যখন দেখিলাম যে, আপাততঃ ভূত আমার প্রতি বিশেষ কোনরূপ অত্যাচার করিতে সাহস করিতেছে না, তখন আহার করিতে লাগিলাম। মনে ভাবিলাম, ভূত শাসন করিবার নিমিত্ত নানারূপ তাবিজ আছে। আমিলাদিগের নিকট হইতে তাহা আনিয়া নিশ্চয় তুমি আমায় উদ্ধার করিবে। ভূত প্রতিদিন আসে আর বলে,—“কেমন, আজ কাজি আনি? প্রতিদিন দেখিয়া Տ Գo দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comািক্যনাথ রাষ্ট" সাউথই