পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্টা তাড়াতাড়ি আসিয়া তাহার হাতে একছড়া ফুলের মালা দিল। বাগান হইতে ফুল লইয়া চুপিচুপি একছাড়া মালা গাঁথিয়া চাকরকে তিনি আজ্ঞা করিয়াছিলেন। সেই মালার জন্য ব্যস্ত হইয়া তিনি চাকরকে ডাকিতেছিলেন । মালা পাইয়া হষ্টচিত্তে তাহা গলায় পরিয়া বির গাত্ৰোখান করিলেন । বর গাত্ৰোথান করিয়াছেন, এমন সময় রসময়বাবু হাঁপাইতে হাঁপাইতে দৌড়িয়া সেই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তখন ঠিক সন্ধ্যা হইয়াছিল; সন্ধ্যার পরেই বিবাহের লগ্ন ছিল। রাত্রি দশটার পর আর এক লগ্ন ছিল। রসময়বাবু আমার কানে কানে বলিলেন,- “কুসুম কিরূপ করিতেছে, শীঘ্য চলুন।” তাহার পর বরযাত্রীদিগকে লক্ষ্য করিয়া তিনি বলিলেন,- “মহাশয়গণ! আমার কন্যার শরীর সহসা কিছু অসুস্থ হইয়াছে। এ প্রথম লগ্নে বোধ হয় বিবাহ হইবে না। রাত্রি দশটার পর যে লগ্ন আছে, সেই লগ্নে বিবাহ হইবে।” রসময়বাবুর সহিত তাড়াতাড়ি আমি তাহার বাটীতে যাইলাম। যে ঘরে কুসী শয়ন করিয়াছিল, সেই ঘরে তিনি আমাকে লইয়া গেলেন। আমি দেখিলাম যে, কুসীর মুখ নিতান্ত রক্তহীন হইয়া বিবৰ্ণ হইয়াছে। চক্ষু বুজিয়া সে শয়ন করিয়া আছে। ডাকিলে উত্তর প্রদান করে না। হাত ধরিয়া দেখিলাম যে, তাহার নাড়ী আরও দুৰ্ব্বল হইয়া পড়িয়াছে। ঘর হইতে বাহির হইয়া আমি রসময়বাবুকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আপনার বাড়ীতে অভিভাবকস্বরূপ যে স্ত্রীলোকটি আছেন, তিনি কি আপনার শালী, কুসুমের মুসী? তিনিই কি কুসুমকে প্রতিপালন করিয়াছেন?” 9)م( রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- “হী। তি ইতুঙ্গুমের মাসী, তিনিই কুসুমকে প্রতিপালন করিয়াছেন।” 3) আমি বলিলাম, - “আপনার ‘ণ আমি ভাল দেখিলাম না। তাহাকে কিছু ঔষধ দিতে হইবে। কিন্তু কুসুমের গোপনে দুই-চারিটি কথা জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা! করি। স্ত্রীলোকদিগের নানা প্রকার রোগ হয়। ডাক্তার ভিন্ন অন্য লোকের সে সব কথা শুনিয়া আবশ্যক নাই। কুসুমের মাসীকে জিজ্ঞাসা করিয়া, তাহার পরে আমি ঔষধের ব্যবস্থা করিব।” বাড়ীর ভিতর একপার্শ্বে ছোট একটি ঘর ছিল, সেই ঘরে আলো জুলিতেছিল। দুইজন পাঞ্জাবী স্ত্রীলোক তাহার ভিতর বসিয়া কি করিতেছিল। রসময়বাবু তাহাদিগকে সে ঘর হইতে বাহির করিয়া দিলেন। ঘরের ভিতর দ্বারের নিকট একখানি চারপাই ছিল । আমাকে সেই চারপাইয়ে বসিতে বলিয়া রসময়বাবু চলিয়া গেলেন। অল্পক্ষণ পরে কুসুমের মাসী আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সম্পূর্ণভাবে নয়, কিন্তু ঘোমটা দ্বারা কতকটা তিনি মুখ আবৃত করিয়াছিলন। আমি তাহাকে বলিলাম,- “কুসুমের প্রাণ সংশয় হইয়াছে। আপনি বোধ হয় জানেন যে, আমি একজন ডাক্তার। আপনাকে সকল কথা জিজ্ঞাসা না করিয়া আমি তাহাকে ঔষধ দিতে পারিতেছি না। তাহার সম্বন্ধে অনেক কথা আছে। আপনি বসুন। দাঁড়াইয়া থাকিলে হইবে না।” মাসী মুদুস্বরে উত্তর করিলেন, — “কুসুমকে তুমি ভাল কর, বাবা! কুসুমকে লইয়া আমি সংসারে আছি। ছয় দিনের মেয়েকে আমার হাতে দিয়া তাহার মা মারা পড়িয়াছে। সেই অবধি St দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comন্মিলাকনাথ রচনাসংখহ