পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একপার্শ্বে বসিয়া নীরবে আমি এই সমুদয় ব্যাপার দর্শন করিতে লাগিলাম। একজন বলিষ্ঠ পাঞ্জাবী স্ত্রীলোক কন্যাকে কোলে করিয়া বাহিরে আনিল। তাহার পশ্চাতে কুসুমের মাসী ও অন্যান্য স্ত্রীগণ আগমন করিলেন। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, বৈঠকখানার যে পার্শ্বে কন্যা-সম্প্রদানের নিমিত্ত স্থান হইয়াছিল, তাহার পশ্চাদিকে বাড়ীর ভিতরের সামিল ছোট একটি ঘর ছিল। সেই ঘর দিয়া বাড়ীর ভিতর যাইবার নিমিত্ত বিবাহ-স্থানের ঠিক পশ্চাতে একটি দ্বার ছিল। সেই দ্বারের নিকট কুসুমের মাসী ও অন্যান্য শ্ৰীগণ উপবেশন করিলেন । পাঞ্জাবী স্ত্রীলোকটি কন্যাকে আনিয়া নির্দিষ্ট আসনে বসাইল। কিন্তু যাই সে ছাড়িয়া দিল, আর কন্যা তৎক্ষণাৎ মুখ “খুবড়িয়া” ভূতলে পতিত হইল। “কি হইল, কি হইল”। বলিয়া কন্যার পিতা, বর, পুরোহিতদ্বয় ও অন্যান্য লোক ব্যস্ত হইয়া তাহাকে তুলিতে গেলেন। চারিদিকে হৈ হৈ রৈরৈ পড়িয়া গেল। বাটীর ভিতর দিকে সেই ছোট ঘরটিতে কুসুমের মাসী বসিয়াছিলেন। “ও মা! এ কি হইল!” বলিয়া তিনি কাঁদিয়া উঠিলেন। সে স্থানে উপবিষ্টা অন্যান্য স্ত্রীগণও তাঁহার কান্নার সহিত আপন আপনি সুর জুড়িয়া দিলেন। আমি অন্যমনস্ক হইয়া কি ভাবিতেছিলাম। সহসা এই গোলযোগে আমার চমক হইল। আমি ডাক্তার,- আমি আর চুপ করিয়া থাকিতে পারিলাম না; সত্ত্বর সেই ধরা-শায়িনী কন্যার নিকট গিয়া উপস্থিত হইলাম। রসময়বাবু, কন্যার এক হাত ধরিয়া, তাহাকে তু চেষ্টা করিতেছিলেন; দিগম্বরবাবু অপর হাত ধরিয়া টানাটানি করিতেছিলেন। আমি ত নিষেধ করিলাম । কুসুমের মুখ তাম্রপাত্রের উপর পড়িয়াছিল ; বসিয়া অতি সাবধানে তাহার মুখটি তুলিয়া, আমি আমার উরুদেশে রাখিলাম। মুখটি ফিরাইয়া আমি দেখিলাম যে, তাহার নাসিকা হইতে শোণিতস্রাব হইতেছে, ত র কণা লাগিয়া তাহার ওষ্ঠও কাটিয়া গিয়াছে। সেই কাৰ্ত্তিত স্থান দিয়াও রক্ত পড়ি নাসিকা ও মুখে রক্ত দেখিয়া আমার বড় ভয় হইল। মনে করিলাম যে, কুসুম বরাবর যাহাঁ বলিয়া আসিতেছিল, তাহাই বা সত্য হয়। তাহার নাড়ী টিপিয়া দেখিলাম। নাড়ী দেখিয়া আমার মন আশ্বাসিত হইল। সে যে মৃত্যুমুখে পতিত হয় নাই, কেবল মূৰ্ছিত হইয়াছে, নাড়ী দেখিয়া তাহা আমি বুঝিতে পারিলাম। কোসা হইতে জল লইয়া তাহার চক্ষু ও মুখে সিঞ্চন করিলাম। বাটীর ভিতর হইতে শীঘ পাখা আনিবার নিমিত্ত রসময়বাবুকে প্রেরণ করিলাম। বর, বরযাত্রী প্রভৃতি লোকগণ চারিদিকে বায়ুরোধ করিয়া ঘিরিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন। তাঁহাদিগকে দূরে সরিয়া যাইতে বার বার বলিলাম। কিন্তু কেহই আমার কথা শুনিলেন না। জনতা করিয়া সেই মূৰ্ছিতা কন্যাকে ঘিরিয়া সকলে দাঁড়াইলেন। সকলেই ঔষধ জানেন। সেই সমুদয় ঔষধ প্রয়োগ করিবার নিমিত্ত সকলে আমাকে পরামর্শ দিতে লাগিলেন । ኳ বসিয়া ‘হায় হুতাশ” করিতেছিলেন। নিকটে আসিয়া তাঁহাকে আমি বাতাস করিতে বলিলাম। কুসুমের মাথা আমার উরুদেশে রহিল। চক্ষু মুদ্রিত করিয়া কুসুম পড়িয়া রহিল। বামহস্তে আমি উৎপাদনের নিমিত্ত চেষ্টা করিতে লাগিলাম । SRAo frig ož3. g3 ze - www.amarboi.comf737”"**”****