পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুৰ্দশ পরিচ্ছেদ ফয়ে ওকার দিয়া যাহা হয়। একমনে কুসী এই বিবরণ শ্রবণ করিতেছিল। তাহার দিকে ফিরিয়া আমি বলিলাম,- “কুসী। শুনিলে তো তোমার বাবুর বিদ্যা।” ‘বাবু বলিল,— “হাঁ কুসী! আমি বড় অন্যায় কাজ করিয়াছি। আমি বুঝিতে পারি নাই যে এতদূর হইবে। সে যাহা হউক, কুসী, তুমি যাদববাবুকে দেখিয়া লজ্জা করিতে পরিবে না। ইনি আমাদের অনেক উপকার করিয়াছেন। ইহার সাক্ষাতে কাশীতে যেরূপ আমার সহিত হাসিতে, কথা কহিতে, এখনও তাঁহাই করিতে হইবে। মনে নাই, কাশীতে তুমি ইহাকে বাপ বলিয়াছিলে?” কুসীর আধ-ঘোমটা ছিল। ‘বাবু উঠিয়া তাহার সে ঘোমটাটুকুও খুলিয়া দিল। কুসী। আপত্তি করিল, হাত দিয়া কাপড় টানিয়া ধরিল, কিন্তু ‘বাবু তাহা শুনিল না। এখন কেবল তাহার মাথায় কাপড় রহিল। এই গোলমালের পর কুসী। আমার কানে-কানে বলিল,- “আপনাকে আমি জ্যেঠা-মহাশয় বলিব ।” বাবা না বলিয়া কেন সে আমাকে জ্যেঠা-মহাশয় বলিবে, তাহা আমি বুঝিতে পারিলাম। আমি বলিলাম,- “বেশ! অতঃপর কুসী বাটীর ভিতর চলিয়া গেল। মাসীর লজ্জা ভাঙ্গা হইয়া গেল। তিনি যে কাজ , সে সম্পর্কে কোন কথা আর কেহ উত্থাপন করিল না। রূপে-গুণে বিভূষিত পাইয়া রসময়বাবুর মনে আর আনন্দ তুৰ্তলৈাগিল। কুসীর সেই উজ্জ্বল গীেরবর্ণ পুনরায় হৰ্ণষ্টতাহার চক্ষু পুনরায় ভাসিয়া উঠিল। চক্ষু-তার সমুদ্রািজলুমকুঁশি বর্ণেরঞ্জিত হইয়া ঢুলু ঢুলু করিতে লাগিল। কাশীর সেই সরল ভাব, সেই মধুর হাসি (পুনরায় কুসীর মুখে দেখা দিল। বয়সের গুণে তাহার কথাবাৰ্ত্তায় কেবল পূৰ্ব্বাপেক্ষা একটু গাভীৰ্য্যের লক্ষণ প্রতীয়মান হইল। তা না হইলে আর সকল বিষয়ে ঠিক সেই কাশীর কুসী হইল। মাঝে মাঝে সে আমার নিকট আসিয়া আমার পাকা চুল তুলিয়া দিত। সেই সময় সে আমাকে কত কথা বলিত। একদিন আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “কুসী! যখন দিগম্বরবাবুর সহিত তোমার বিবাহের কথা হইয়াছিল, তখন আমি মনে করিয়াছিলাম যে, সে বিবাহ নিবারণ করিবার নিমিত্ত তুমি আমাকে চেষ্টা করিতে বলিবে! তাহা কর নাই কেন?” কুসী। উত্তর করিল,— “পাছে মাসী আত্মহত্যা করেন, আমি সেই ভয় করিয়াছিলাম। কিন্ত আমি নিশ্চয় বুঝিয়েছিলাম যে, এ বিবাহ হইবে না, বিবাহের পূৰ্ব্বে আমি মরিয়া যাইব। তবে আর মিছামিছি গোলমাল করিবার আবশ্যক কি? আর দেখুন, জ্যেঠা-মহাশয়! এই দুই বৎসর আমি মানুষ ছিলাম না। আমি যে কি ছিলাম, তাহা বলিতে পারি না। আমার যেন জ্ঞানগোচর কিছুই ছিল না। যেন ভয়ানক একটা দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছি, এ দুই বৎসর আমার ঠিক তাহাই বলিয়া মনে হয়!” চারি-পাঁচ দিন পর আমি হীরালালকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “বাবু তোমার পিতাকে তুমি পত্র লিখিয়াছ?” ‘বাবু উত্তর করিল,— “না জ্যেঠা-মহাশয়! তাঁহাকে আমি এখনও পত্ৰ লিখি নাই। তাহারা

  • ে****** দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ WSDOY