পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি অনেক চেষ্টা করিলাম। কিন্তু তাহারা পুনরায় আমার মুখ বন্ধ করিয়া দিল, আর বলপূৰ্ব্বক আমাকে ধরিয়া রহিল। সুতরাং আমাকে চুপ করিতে হইল। ডাক্তার আমাকে বলিলেন,- “বৃথা। আপনি চেষ্টা করিতেছেন, বৃথা গোলমাল করিতেছেন। গ্রামের সকলেই জানে যে, আপনি পাগল হইয়াছেন। কেহই আপনার সাহায্য করিতে এ স্থানে আসিবে না। আপনি যদি স্থিরভাবে থাকিতে অঙ্গীকার করেন, তাহা হইলে আপনার মুখের কাপড় ও হাতের বন্ধন খুলিয়া দিতে পারি। কিন্তু এই উন্মত্ত অবস্থায় পাছে আপনি অন্য লোককে খুন করেন, সেজন্য পায়ে আপনার বেড়ি ও শৃঙ্খল থাকিবে।” নিরুপায় হইয়া আমি সেইরূপ অঙ্গীকার করিলাম। তাহারা আমার মুখের কাপড় ও হাতের বন্ধন খুলিয়া দিল। ইহাতেও আমি অনেকটা সুস্থ বোধ করিলাম। কিন্তু আমার মস্তক ও ঘাড় অতিশয় জুলিতে লাগিল। কিছুক্ষণ পরে, ঘরে আমাকে চাবি দিয়া সকলে চলিয়া গেল। শৃঙ্খলাবদ্ধ অবস্থায় ঘরের ভিতর একলা বসিয়া আমি কত কি যে চিন্তা করিতে লাগিলাম, মনে কত যে দুঃখ হইল, তাহা আর আপনাদিগকে কি বলিব, আপনারাই তাহা ভাবিয়া দেখুন!! পরদিন প্ৰাতঃকালে প্ৰথমেই গুরুদেব আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন । আমার এইরূপ অবস্থা দেখিয়া তিনি অতিশয় শোক প্ৰকাশ করিতে লাগিলেন। আমার মাথায় তাহার পদধূলি দিয়া তিনি বলিলেন,- “আশীৰ্ব্বাদ করি, বাবা, তুমি শীঘ্রই আরোগ্যলাভ কর।” গ্রামের আরও কয়েকজন লোক আমার সহিত ৎ করিতে আসিলেন। আমি উন্মত্ত হইয়াছি, সেজন্য অনেকেই দুঃখপ্রকাশ করিতে লাগিল্পেনা। শীঘ আমি আরোগ্যলাভ করিতে পারিব, সে আশ্বাসও অনেকে আমায় প্ৰদান কুব্রিািলন। ইহাদিগের মধ্যে যাহাদিগকে আমি সুহৃদ বলিয়া জানিতাম, তাঁহাদিগের নিকট ভূমি অনেক মিনতি করিয়া বলিলাম যে, আমি পাগল হই নাই, আমি সজ্ঞানেই আছি। আমার কথা বিশ্বাস করিলেন না । সকলেই বলিলেন যে, পাগল না হইলে সৰ্ব্বনাশ করে না, ওলাউঠা রোগগ্ৰস্ত সাঁওতালকে কেহ ঘরে আনে না । আমার অনেক ত-মিনতি-বাক্যে একজন কেবল আমার শ্বশুরালয়ে আমার গৃহিণীর নিকট এই সংবাদ প্রেরণ করিতে স্বীকৃত হইলেন। দিনের বেলা আমার ভ্রাতার এক বন্ধু আমার নিমিত্ত আহারীয় দ্রব্য লইয়া আসিলেন। কিন্তু সেদিন আমি জল পৰ্যন্ত গ্ৰহণ করিলাম না। পাড়ার অনেক ছেলেও সেদিন আমাকে দেখিতে আসিল! কেহ বলিল,— “সুবল দাদা,” কেহ বলিল,- “সুবল ককা, পাগল হইয়াছে, আয় ভাই দেখি।” ঘরের তখন দ্বার বন্ধ ছিল । জানালা দিয়া উকি মারিয়া তাহারা আমাকে দেখিতে লাগিল । আমি তখন মুখ বুজিয়াছিলাম। তথাপি একটি ছেলে বলিয়া উঠিল,— “ঈশ!! একবার দাঁত দেখা ঠাকুর-মা বলিয়াছেন যে, একবার ছাড়া পাইলে আর রক্ষা রাখিবে না, পাড়ার যত ছেলেকে ঐ লম্বা লম্বা দাঁত দিয়া ছিড়িয়া একেবারে খণ্ড খণ্ড করিয়া খাইয়া ফেলিবো।” এই বলিয়া তাহারা জানােলা দিয়া ছোট ছোট ঢ়িল ছুড়িয়া আমাকে মারিতে লাগিল। তাহার পর আমার উঠানের পেয়ারাগাছে উঠিয়া পেয়ারা খাইল । পেয়ারাগাছা হইতে আমার বাটীর এক কোণে দুই ঝাড় আখ দেখিয়া তাহা ভাঙ্গিয়া খাইতে খাইতে চলিয়া গেল। সন্ধ্যার পর সেই ডাক্তার ও আর তিন জন লোক পুনরায় আসিলেন। কিন্তু আমার ভ্রাতা আমার নিকট আসিল না। একটি গেলাসে কিছু ঔষধ লইয়া ডাক্তারবাবু আমাকে তাহা খাইতে . øxfff <syntଥ୍ ଘଁbript Volby uskla »ižo 333) a www.amarboi.comio §න්දී