পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌরীশঙ্কর উত্তর করিলেন,- “থি-বী, যু-দে।” মাতা জানিতেন যে, ঐ দুইটি শব্দ ভিন্ন গৌরীশঙ্কর অন্য কোন কথা মুখে আনিবেন না। তথাপি মায়ের প্রাণী। তিনি কেবল ঐ দুইটি শব্দই শুনিবার নিমিত্ত গৌরীশঙ্করকে সম্বোধন করিয়া নানা কথা কহিতেন, নানা পরিচয় সহিত নানা গল্প করিতেন। পুত্র কেবল বলিত,- 'থি-বী, যু-দে।” পঞ্চম অধ্যায় a. দেখিতে সামান্য লোক পুত্ৰকে লইয়া গৌরীশঙ্করের মাতা বাটী হইতে বাহির হইলেন। প্রথম অর্থাভাব, দ্বিতীয় পাঁচ জনের সহিত সাক্ষাৎ হইবার সম্ভাবনা,- এই দুই কারণে তাহারা পদব্ৰজে পথ চলিতে লাগিলেন। মাতা বৃদ্ধ ছিলেন, অধিক পথ চলিবার তাঁহার শক্তি ছিল না; একদিনের পথ তিনচারি দিনে অতিক্রম করিতে লাগিলেন। তাঁহার হাতে অতি সামান্য টাকা ছিল। পাছে সেগুলি শীঘ শেষ হইয়া যায়, সেই ভয়ে যথাসাধ্য ভিক্ষা দ্বারা_ৰ্ত্তিন পথে দিনপাত করিতে লাগিলেন। ক্ষিপ্ত পুত্র সহিত বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণীকে দেখিয়া, সকলের(লূয়া হইত। সে নিমিত্ত পথে আহারাভাবে তাহাদিগকে ক্লেশ পাইতে হয় নাই। পুত্র কিরূপ্লেক্ষিপ্ত হইয়াছে, তাহা শুনিয়া অনেকে বৃদ্ধার দুঃখে দুঃখী হইত। তাঁহার দুঃখে কাতর হইয়ুষ্ট কোন কোন স্থানে ধনবান লোকের গৃহিণীগণ আঁহাকে নগদ অর্থও প্ৰদান করিতেন! স্ট্রেত্রের চিকিৎসার নিমিত্ত কোন দিন কি আবশ্যক হয়, এই ভাবিয়া ব্ৰাহ্মণী যথাসাধ্য কিছু কিছু সঞ্চয় করিতেন। এইরূপে দুইজনে গয়া, কাশী, প্ৰয়াগ, বৃন্দাবন, হরিদ্বার, কুরুক্ষেত্র প্রভৃতি নানা তীৰ্থস্থানে ভ্ৰমণ করিলেন। সাধু-সন্ন্যাসী দেখিলে সকলকেই মাতা অতি বিনীতভাবে পুত্রের বিবরণ প্ৰদান করিতেন। কিন্তু কোনও স্থানে কাহারও দ্বারা তাঁহার বাসনা পূর্ণ হইল না; গৌরীশঙ্করকে কেহই সে বিপদ হইতে মুক্ত করিতে পারিল না। তবে বায়ু-পরিবর্তনে, নানা দেশ পৰ্যটনে ও নানা দৃশ্যদর্শনে এইমাত্র উপকার হইল যে, গৌরীশঙ্করের বিমৰ্ষভােব অনেকটা দূর হইল; পূৰ্ব্বাপেক্ষা তাঁহার চিত্ত যেন কিছু প্ৰফুল্লভাব ধারণ করিল। কিন্তু যে স্থানেই গমন করেন, যে স্থানেই দুই জনে রাত্রি যাপনের নিমিত্ত শয়ন করেন, সেই স্থানেই রাত্রি তিন প্রহরের সময় গৌরীশঙ্করের পৃষ্ঠ ভূতের প্রহারে প্রপীড়িত হয়। তবে প্ৰহারে প্রহারে পিঠে কড়া পড়িয়া গেল। পিঠ কঠিন হইয়া পূৰ্ব্বাপেক্ষা যাতনার কিছু লাঘব হইল। যাহা হউক, গৌরীশঙ্করের উন্মত্ততা ঘুচিল না, ভূতও তাঁহাকে ছাড়িল না। এইরূপে তিন বৎসর পথে পথে কাটিয়া গেল। মাতার বাৰ্দ্ধক্য দিন দিন বাড়িতে লাগিল। বয়সের গুণে, পথক্লেশে, ভাবনা চিন্তায়, দিন দিন তিনি দুৰ্ব্বল হইতে লাগিলেন। চক্ষুদ্বয়ের দৃষ্টিশক্তি ক্রমে হীন হইতে লাগিল। রোগগ্ৰস্ত হইয়া, যদি কিছুদিন তাঁহাকে পড়িয়া থাকিতে হয়, তাহা দুই জনের কি দশা হইবে, আর সহসা যদি তাঁহার মৃত্যু হয়, তাহা হইলে श्रृंयल केि হইবে, এইসব ভাবিয়া প্ৰাণ তাঁহার বড়ই আকুল হইল। যাহা হউক, তিন বৎসর পরে শীতকালের প্রারম্ভে তাহারা উত্তরাখণ্ড হইতে নামিয়া, পুনরায় হরিদ্বারে আসিয়া 8vo দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্যািক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ