পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিলেন যে, মিহিরের পীড়া বড় কঠিন হইয়াছে। তাহার বক্ষঃস্থলের দুই দিকেই প্রদাহ হইয়াছে। যাহা হউক, তাহার ঔষধ ও পথ্যের আয়োজন করিয়া, ভট্টাচাৰ্য মহাশয়কে তাহার নিকট বসাইয়া, আমি সেই রাত্ৰিতেই গদাধর মোড়লের অনুসন্ধানে গমন করিলাম। এ স্থানে বলিয়া রাখি যে, যখন যেরূপ ঘটনা ঘটিতেছিল, ভট্টাচাৰ্য মহাশয়কে তাহার সমুদয় বিবরণ আমি প্ৰদান করিতেছিলাম। তাঁহার অনুগ্রহ আমি এ জীবনে ভুলিতে পারিব না।” গদাধর মোড়লের সহিত আমার সাক্ষাৎ হইল। পাল মহাশয়ের তিনি বন্ধু বটেন; কিন্তু মিহির যে নিরপরাধ প্রমাণিত হইয়াছে, সে সংবাদ এ পৰ্যন্ত তিনি শ্রবণ করেন নাই। আমার মুখে সেই সমুদয় বিবরণ শুনিয়া, তিনি অতিশয় আহাদিত হইলেন। কিন্তু মিহিরের কঠিন পীড়া শুনিয়া তিনি দুঃখিত হইলেন। তাঁহার মুখে শুনিলাম যে, পাল মহাশয় কাশীতে আছেন। সেই ঠিকানায় তৎক্ষণাৎ আমি বিস্তারিতভাবে তারে খবর দিলাম। ডাক্তার খরচের মিনিস্তত্ত অনেকগুলি টাকা সঙ্গে লইয়া, মোড়ল মহাশয় সেই রাত্রিতেই আমার সঙ্গে মিহিরকে দেখিতে আসিলেন। মিহিরকে দেখিয়া তিনিও পাল মহাশয়কে স্বতন্ত্রভাবে তারে খবর দিলেন । একদিন পরে পাল মহাশয় সপরিবারে কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বলা বাহুল্য যে, মিহির যে নিরপরাধ প্রমাণিত হইয়াছে, সেকথা। তিনিও পূৰ্ব্বে শ্রবণ করেন নাই। আমার তারের সংবাদে সে সুসমাচার তিনি প্রথম প্রাপ্ত হইলেন। পুত্রের মুখ দেখিয়া তিনি আনন্দিত হইলেন, কিন্তু তাহার পীড়ার জন্য সকলকেই ঘোরতর উৎকণ্ঠিত হইতে হইল। মিহিরের পীড়া ক্রমে এমনি কঠিন হইয়া উঠিল যে, দিন কয়েক তাহার বাঁচিবার আশা একেবারেই ছিল না। পাল মহাশয়, তাহার গৃহিণী, রাধারাণী, ভট্টাচাৰ্য আর আমি—এই কয়জনে, আহারনিদ্ৰা পরিত্যাগ করিয়া মিহিরের সেবা-শুশ্ৰষা করি ।। যাহা হউক, ভগবানের কৃপায় মিহির এ যাত্রা রক্ষা পাইল । পীড়ার যখন একটু উপশম হইল, র একদিন আমার হাতটি ধরিয়া কান্দ-কাদ স্বরে বলিল,— “ভাই! তুমি আমার পাল মহাশয়, তাহার গৃহিণী ও প্রাধারাণী সকলেই মিহিরের বিছানায় পার্শ্বে সেই সময় বসিয়াছিলেন। মিহিরের এই কথা শুনিয়া পাল মহাশয় বলিলেন,- “হা, মিহির! মদন তোমার ভাই। মদনকে প্রথম আমি বুদ্ধি-শুদ্ধিহীন পাগল বলিয়া মনে করিয়াছিলাম। কিন্তু ইহার স্বভাব দেখিতেছি, সম্পূর্ণরূপে পরিবৰ্ত্তিত হইয়া গিয়াছে। ইহার ধীর-মধুর বাক্যে আমি বড়ই গ্ৰীত হইয়াছি। তাহার পর, মদন আমার যে উপকার করিয়াছে, জীবনে তাহা আমি কখনই ভুলিতে পারিব না। সে রাত্রি তোমার পলায়ন, তাহার পর খুনী অভিযোগ হইতে তোমাকে অব্যাহতি দান, অবশেষে এই সঙ্কট পীড়ায় তোমার জীবন রক্ষা,- এ সমুদয় মদনের সহায়তায় হইয়াছে। সে নিমিত্ত আমি বলিতেছি যে, তুমি আমার যেমন পুত্র, মদনও সেইরূপ আমার পুত্র। রাধারাণী মা! তুমি কি বল?” রাধারাণী বুঝিতে পারিল । লজ্জায় সে ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল। কোন উত্তর করিল না। তাহার পর, সে স্থান হইতে উঠিয়া সে পলায়ন করিল। সেইদিন আমি মিহিরকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “মিহির! মুখস পরিয়া কলিকাতায় জনাকীর্ণ পথ দিয়া তুমি কি করিয়া চলিতে? কেহ তোমাকে কিছু বলিত না?” একটু হাসিয়া মিহির উত্তর করিল,— “তুমি পাগল! পথ চলিবার সময় আমি মুখস পরিতাম না। কেবল অশ্বথগাছে উঠিবার সময় আমি মুখস পরিতাম। চোর মনে করিয়া কেহ আমার 8RS ՀIՓ}-ՀՍտ7 sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro