পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বটগারও বুঝিতে পারিলেন যে, আর তাহার এ-রাজ্যে বাস করা উচিত নহে। কোনমনে। প্রহরীদিগকে ফাঁকি দিয়া তিনি পলায়ন করিলেন। তিন দিন তিন রাত্রি ক্রমাগত দ্রুতবেগে ভ্ৰমণ করিয়া তিনি অষ্ট্ৰীয়া-রাজ্যে গিয়া উপস্থিত হইলেন। কিন্তু সাক্ষণ দেশীয় সৈন্যও তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবিত হইয়াছিল। অষ্ট্ৰীয়ারাজ্যের ভিতর উপস্থিত হইয়া নিশ্চিত।মনে একস্থানে রাত্রিকালে বটগার নিদ্ৰা যাইতেছিলেন। সেই স্থানে সাক্ষণ-সৈন্য উপস্থিত হইয়া তাহাকে ধরিয়া ফেলিল। অষ্ট্ৰীয়া-সম্রাটের দোহাই দিয়া বটগার প্রাণপণে চীৎকার করিতে লাগিলেন, কিন্তু কোন ফল হইল না। সাক্ষণ-সৈন্য তাঁহাকে ধৃত করিয়া পুনরায় ড্রেসডেন নগরে লইয়া আসিল। রাজার আজ্ঞায় এবার তাঁহাকে এক সুদৃঢ় কেল্লার ভিতর কয়েদীর ন্যায় আবদ্ধ করিয়া রাখা হইল। এই স্থানে রাজা তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। নিতান্ত কোপাবিষ্ট হইয়া, কর্কশ বচনে রাজা তাঁহাকে বলিলেন, —“আমার ধনাগার শূন্য হইয়া আছে। দশ পল্টন সৈন্য অনেকদিন বেতন পায় নাই। সোনা তোমাকে নিশ্চয় প্রস্তুত করিতে হইবে। সোনা প্ৰস্তৃত না করিলে আমি তোমাকে ফাঁসি দিব।” প্রকৃত কথা এই যে, বটগার সোনা করিতে জানিতেন না। লোককে প্রতারণা করিবার উদ্দেশ্যে হউক, অথবা মান-সন্ত্রমের জন্য হউক, তিনি মিথ্যা করিয়া বলিয়াছিলেন যে, আমি সোনা করিতে জানি, সুতরাং রাজার জন্য তিনি সোনা প্রস্তুত করিতে পারিলেন না। যাহা হউক, রাজা তাঁহাকে ফাঁসি দিলেন না, চোরের ন্যায় তাহাকে কয়েদ করিয়া রাখিলেন। এইরূপে কয়েক বৎসর কাটিয়া গেল। ইহার কিছুদিন পূৰ্ব্বে পোৰ্ত্তাগাল দেশের লোক জাহাজে চড়িয়া ভারতবর্ষ, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে আসিয়াইিছল। তাহার পর ওলন্দাজ, ফরাসী ও ইংরাজ আসিয়াছিল। পূৰ্ব্ব অঞ্চল হইতে নানা দ্রুৱাই লইয়া এই সকল দেশের বণিকৃগণ ব্যবসা করিতেছিল। চীন হইতে চীনের বাসন কেহ কহ স্বদেশে লইয়া গিয়াছিল। উৎকৃষ্ট চীনের বাসন দেখিতে অতি সুন্দর। একপ্রকার রঙের মাটি লইয়া চীনের লোকে রেকবি, বাটি প্রভৃতি বাসন প্রস্তুত করে। সেই লাল নীল প্রভৃতি নানা বর্ণের মসলা দ্বারা তাহারা অলকৃত করে। তাহার পর সেই আগুনে পোড়াইলে মৃত্তিকা গলিয়া একপ্রকার অসচ্ছ কাচে পরিণত হয়। লাল নীল প্রভৃতি নানা বর্ণের অলঙ্কারে পরিশোভিত উজ্জ্বল মসৃণ শুভ্রবর্ণের বাসনগুলি দেখিতে সুন্দর হয়। জৰ্ম্মণী, হল্যাণ্ড, ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশে এই বাসন সোনা অপেক্ষা অধিক মূল্যে বিক্রীত হইতে লাগিল। তাহা দেখিয়া বটগারের একজন বন্ধু তাঁহাকে বলিলেন, — “বটগার! তুমি যে সোনা করিতে জান না, এখন সে কথা বলিলে কেহ বিশ্বাস করিবে না। রাজা মনে করিতেছেন যে, তুমি সোনা করিতে জান, কেবল দুষ্টামি করিয়া তুমি সে বিদ্যা তাহার নিকট প্রকাশ করিতেছি না। তুমি রাজার কোপে পতিত হইয়াছ। চিরকাল তোমাকে বন্দী হইয়া থাকিতে হইবে। তুমি পণ্ডিত লোক। রসায়নশাস্ত্ৰ তুমি ভালরূপ অবগত আছ। তুমি এক কাজ কর। চীন হইতে এখন যে মৃন্ময় বাসন আমদানী হইতেছে, তাহার মূল্য সোনা অপেক্ষা অধিক। তুমি সেই বাসন প্রস্তুত কর। তাহা বেচিয়া রাজা অনেক টাকা পাইলে সন্তুষ্ট হইয়া কারাবাস হইতে তিনি মুক্ত করিয়া দিবেন।” বটগার পরামর্শমত কাজ করিলেন। নানারূপ মৃত্তিকা লইয়া তিনি পরীক্ষা করিতে আরম্ভ করিলেন। রাজাও তাঁহাকে এ কাৰ্য্যে সহায়তা করিতে লাগিলেন। তাঁহার আদেশে নানাস্থান হইতে নানা বর্ণের নানা প্রকারের মৃত্তিকা আসিতে লাগিল। সেই মৃত্তিকা দিয়া পাত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহাদিগকে আগুনে পােড়াইয়া, তিনি পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। কিন্তু কোন মৃত্তিকায় চীনের মত বাসন প্ৰস্তুত ayError ୩ୟ୍ଯ లిసి sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro